নভেম্বর ১৫, ২০২৪

উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির আধা-সামরিক বাহিনীর সংঘাত তীব্র আকার ধারণ করেছে। আর এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বোমাবর্ষণ করে কঙ্গোর ১০ নাগরিককে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।

কঙ্গোর সরকার নিজেই এই তথ্য সামনে এনেছে। বুধবার (৭ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুদানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সেনাবাহিনীর হামলায় ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর দশ জন নিহত হয়েছেন বলে কঙ্গো সরকার জানিয়েছে। গত রোববার বিকেলে খার্তুমের ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আফ্রিকাতে সুদানি সেনাবাহিনীর বোমা হামলায় তারা মারা যান।

কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের যেটা খুব কষ্ট দেয়, তা হলো– সুদানের নিয়মিত সেনাবাহিনী এটা জেনেই বোমা ফেলেছিল যে সেখানে বিদেশিরা আছে’।

উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে আট সপ্তাহে পা দেওয়া এই লড়াইয়ের জেরে রাজধানী খার্তুমসহ অন্য এলাকায় লুটপাট ও অরাজকতাও ছড়িয়ে পড়েছে। আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর যোদ্ধাদের শহরজুড়ে বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় ঘাঁটি রয়েছে। আর মূলত সেগুলো লক্ষ্য করেই সামরিক বাহিনীর বিমান হামলার প্রবণতা রয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।

বিবিসি বলছে, গত রোববারের বোমা হামলায় যারা নিহত হয়েছেন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এটি এমন একটি এলাকা হতে পারে যেখানে সংঘাত থেকে বাঁচতে বিদেশি বহু নাগরিক হয়তো আশ্রয় নিয়েছিলেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী প্রধান ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেছেন, খার্তুমে হামলায় ১০ জন শরণার্থী মারা গেছেন। অবশ্য এ বিষয়ে আরও বিশদ বিবরণ দেননি তিনি।

আরএসএফ বলেছে, রোববারের ওই বোমা হামলাটি এমন একটি এলাকায় হয়েছে যেখানে আফ্রিকান শরণার্থীরা অবস্থান করছিল। তবে হামলায় নিহত কঙ্গোলিজ নাগরিকদের সংখ্যা ২৫ বলে উল্লেখ করেছে তারা।

আধাসামরিক এই বাহিনীটি ঘটনাস্থল থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও টুইট করেছে। ভিডিওতে থাকা লোকেরা – একজন দুস্থ নারীসহ যিনি বলেছেন, তার স্বামী হামলায় মারা গেছে – আরবি এবং লিঙ্গালার মিশ্রণে কথা বলছেন। আর এই ভাষাটি মূলত ডিআর কঙ্গোর পশ্চিমে বলা হয়।

একজন বলেছেন: ‘আমরা কঙ্গোলিজ… এখানে অনেক মানুষ কঙ্গোলিজ। কোথায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়?’

কঙ্গোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফ লুতুন্ডুলা বলেছেন, ডিআর কঙ্গো সুদান সরকারের কাছে এই ঘটনায় ব্যাখ্যা চেয়েছে এবং নিহতদের মৃতদেহ বিনামূল্যে প্রত্যাবাসন করা হবে বলে আশা করছে।

এছাড়া সংঘাতের মধ্যে কঙ্গোলিজ সরকার সুদানি কর্তৃপক্ষকে একটি মানবিক করিডোর খুলতে বলেছে যাতে হামলায় আহতরা এবং সুদানে এখনও আটকে থাকা অন্যদের সরিয়ে নেওয়া যায়। তবে এসব বিষয়ে সুদানের সেনাবাহিনী এখন পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি।

বিবিসি বলছে, গত ১৫ এপ্রিল সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে সুদানে বসবাসরত কঙ্গোর নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার জন্য জোরেশোরে চেষ্টা চলছে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কিছু বাস ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আফ্রিকা থেকে শিক্ষার্থীদের মিশরীয় শহর আসওয়ানে নিয়ে গিয়েছিল।

পরে সেখান থেকে তাদের কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এই ধরনের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুতুন্ডুলা জানিয়েছেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...