চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের সবশেষ হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ১৩ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার, যা এবার নেমেছে ৪ দশমিক ৬২ বিলিয়নে। এই সাত মাসে বাংলাদেশ থেকে পণ্য ও সেবা রপ্তানি হয়েছে ৩১ দশমিক ৩৯ বিলিয়ন ডলার। বিপরীতে আমদানি হয়েছে ৩৬ বিলিয়ন ডলারের।
করোনা ভাইরাস মহামারীর পর চাপে পড়া অর্থনীতিতে বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আরো বেশ কয়েকটি সূচক বাংলাদেশের জন্য স্বস্তিদায়ক। জানুয়ারি শেষে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ৩১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, এক মাসে আগেও যা ছিল মাত্র ১৯৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাস শেষে এ হিসাবে ঘাটতি ছিল ৪৬৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার।
চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা মানে নিয়মিত লেনদেনে কোনো ঋণ করতে হয় না দেশকে। আর ঘাটতি থাকলে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়।
নানামুখী চাপে পড়ে ২০২২ সালের জুন শেষেও এ হিসাবে বড় ঘাটতি ছিল। আমদানি কমানোসহ বৈদেশিক মুদ্রার খরচ কমিয়ে আনার পর ২০২৩ সালের জুলাইতে এ হিসাব ইতিবাচক ধারায় ফেরে। এই সময়ে সার্বিক ভারসাম্যে (ওভারঅল ব্যালেন্স) ঘাটতিও কিছুটা কমেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-জানুয়ারিতে এ হিসাবে ঘাটতি দেখা রয়েছে চার দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।
২০২২-২৩ অর্থবছরের জানুয়ারি শেষে ঘাটতি ছিল সাত দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলার।
এক বছরের ব্যবধানে সার্বিক ভারসাম্যর ঘাটতি কমেছে দুই দশমিক সাত বিলিয়ন ডলার বা ৩৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
তবে সার্বিক হিসাবে ঘাটতি বেড়েছে। জানুয়ারি শেষে এই ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার। আগের অর্থবছরের এই সময়ে ঘাটতি ছিল ৮১ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ এবার ঘাটতি বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৩ বিলিয়ন ডলার বা ৮০৫ শতাংশ। গত ডিসেম্বর শেষেও এখানে ঘাটতি ছিল পাঁচ দশমিক ২৩ বিলিয়ন ডলার।
এই সময়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধও বেড়েছে। গত সাত মাসে বাংলাদেশ শোধ করেছে ১১৫ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে যার পরিমাণ ছিল ৯১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। অর্থাৎ দায় পরিশোধ বেড়েছে ২৬ দশমিক ২৩ শতাংশ বা ২৪ কোটি ডলার।
অর্থ বছরের সাত মাসে নিট সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) এসেছে ৯০ কোটি ১০ লাখ ডলার। আগের অর্থ বছরের এই সময়ের চেয়ে কম এসেছ বা ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ।
২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই-জানুয়ারিতে নিট বৈদেশিক বিনিয়োগ এসেছিল ৯৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি শেষে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফ এর বিপিএম সিক্স অনুযায়ী বাংলাদেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার।
তবে হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ মার্চ রিজার্ভ উন্নীত হয় ২১ দশমিক ৫২ বিলিয়নে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস হিসাবে তা ২৬ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।