ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহের গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেয়া হবে না । আজ মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ব্রিফিং করছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে জানাজার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তার মরদেহ পিরোজপুরে নিতে দেবে না বলে হাজার হাজার নেতাকর্মী লাশবাহী গাড়ির ওপর শুয়ে পড়ে। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তারা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল দখলে নিয়ে নেয়। দুটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় উত্তেজিত নেতাকর্মীরা। পুলিশের ওপরও আক্রমণ চালায়।
তিনি বলেন, ফেসবুক লাইভে এসে সারা দেশ থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের ঢাকায় আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাধ্য হয়ে পুলিশ সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করে; টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
ডিএমপি কমিশনার আরও জানান, হাসপাতালে রোগীদের সার্বিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে পুলিশ সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগে বাধ্য হয়। তাই তাণ্ডব চালানোর পরও মানবিক দিক বিবেচনা করে পুলিশ প্রথমে কোনো অ্যাকশনে যায়নি।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) সোমবার (১৪ আগস্ট) রাতে মারা যান দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার আগে রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে তিনি কাশিমপুর কারাগারে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে সন্ধ্যায় তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়।
২০১৩ সালে তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন ও ধর্মান্তর করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল দুটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছিলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে ২০১০ সালের ২৯ জুন সাঈদী গ্রেফতার হন। পরে ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।