ইসরাইলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার বেশিরভাগই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে আগেই। বাকি ছিল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডটির রাফা শহর। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এ শহরেই ইতোমধ্যে হামলা জোরদার করেছে ইসরাইল।
তবে এর মধ্যেও রোববার গাজার অন্যান্য এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে হামাসের প্রতিরোধযোদ্ধাদের লড়াই হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে একটি বার্তা স্পষ্ট হয়েছে যে ভবিষ্যতে দীর্ঘ সময়ের জন্য গাজা উপত্যকায় শক্তিশালী একটি গোষ্ঠী হয়ে টিকে থাকতে পারে হামাস।
ইসরাইলি বাহিনী অভিযান চালিয়ে কোনো একটি এলাকা হামাস যোদ্ধামুক্ত ঘোষণা করে। তবে তা খুব বেশি সময়ের জন্য স্থায়ী হয় না। হামাস যোদ্ধারা আবার সংগঠিত হয়ে লড়াইয়ে ফিরে আসছেন। সাত মাসের এই যুদ্ধে গাজায় এটাই সবচেয়ে পরিচিত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন রোববার বলেছেন, গাজার শাসনভার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে ইসরাইল এখনো কোনো ধারণা দিতে না পারায় তিনি হতাশ। এর অর্থ দাঁড়ায়, গাজায় ইসরাইলের বিজয় স্থায়ী না–ও হতে পারে এবং এর মধ্য দিয়ে সেখানে বিশৃঙ্খলা, নৈরাজ্য ও আবারও হামাসের শক্তিশালী উপস্থিতি দেখা দিতে পারে।
হামাসের পক্ষ থেকে রোববার বলা হয়েছে, তাদের যোদ্ধারা জাবালিয়ার কাছে ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে তুমুল লড়াই করেছে। এ ছাড়া জৈতুনে ইসরাইলি বাহিনীকে লক্ষ্য করে মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছেন যোদ্ধারা।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী ও হামাস দুই পক্ষই জানিয়েছে, গেল সপ্তাহের শেষ দিকে গাজার উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের সরাসরি যুদ্ধ হয়েছে।
প্রায় ৩ লাখ মানুষ গত সপ্তাহে রাফা থেকে পালিয়ে গেছে বলে গাজায় ফিলিস্তিনিদের সাহায্যকারী জাতিসংঘের প্রধান সংস্থা রোববার জানিয়েছে। ইসরাইলি আগ্রাসন থেকে বাঁচতে গাজা উপত্যকার দক্ষিণ প্রান্তের এই শহরটি গত সাত মাস ধরে ১০ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষের কাছে আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
ইসরাইলি সরকার রাফা ও গাজার অন্যত্র নতুন স্থানান্তর আদেশ জারি করার কয়েক ঘণ্টা পর সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ঘোষণা দেয় ইউএনআরডব্লিউএ নামে পরিচিত জাতিসংঘের সংস্থা।
আন্তর্জাতিক সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরাইলি সামরিক বাহিনী শহরটিতে আক্রমণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে গত কয়েক দিনে আশঙ্কা আরও গভীর হয়েছে।
মূলত লাখ লাখ ফিলিস্তিনির আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠা রাফা শহরে বড় ধরনের হামলার বিরোধিতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।