লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে গত সপ্তাহে। কিন্তু এরপরও দেশটিতে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে পৃথক হামলায় ১১ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অবস্থানে পাল্টা হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহও। মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে হিজবুল্লাহর সাথে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও লেবাননে পৃথক হামলায় ১১ জনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। নিহতদের মধ্যে লেবাননের একজন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাও রয়েছেন।
এর আগে সোমবার ইসরায়েলের বিমান হামলায় দুইজন নিহত হয়। পরে হিজবুল্লাহ প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েলি সামরিক অবস্থানের বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। আর এতে করে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি খাদের কিনারে পৌঁছে গেছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, ইসরায়েল পরে আরও কয়েক দফায় বিমান হামলা চালায় যাতে কমপক্ষে ৯ জন নিহত হয়।
হিজবুল্লাহ সোমবার বলেছে, তারা কাফার চৌবা পাহাড়ে একটি ইসরায়েলি সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করে যুদ্ধবিরতির “বারবার লঙ্ঘনের” বিরুদ্ধে “প্রাথমিক প্রতিরক্ষামূলক প্রতিক্রিয়া” জানিয়েছে। কাফার চৌবা এলাকাটি মূলত একটি বিতর্কিত এলাকা যা লেবানন নিজেদের বলে দাবি করে থাকে।
হিজবুল্লাহ বলেছে, গত সপ্তাহের বুধবার যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল বার বার হামলা চালিয়ে তা লঙ্ঘন করে চলেছে। লেবাননজুড়ে মারাত্মক বিমান হামলা চালানোর পাশাপাশি দক্ষিণে বেসামরিক লোকদের ওপর গোলাবর্ষণ এবং রাজধানী বৈরুতসহ লেবাননের আকাশসীমায় ড্রোন ও জেট বিমান চালাচ্ছে ইসরায়েল।
লেবাননের শক্তিশালী এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি বলেছে, তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে “সতর্কতামূলক” হামলা চালিয়েছে কারণ যুদ্ধবিরতির “এই লঙ্ঘন বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আবেদন সফল হয়নি”।
কিন্তু হিজবুল্লাহর এই পদক্ষেপও ইসরায়েলি হামলা রোধ করতে পারেনি। হিজবুল্লাহ হামলার “কঠোর” জবাব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসাবে ইসরায়েল একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভিযানে হারিসে পাঁচজন এবং দক্ষিণ লেবাননের তাল্লোসাহতে চারজন নিহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নেতানিয়াহু একটি বিবৃতি দিয়ে এ ঘোষণা দেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় হোয়াইট হাউস থেকে চুক্তিটিকে বৃহত্তর শান্তির পথ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছিলেন।
যদি এই চুক্তি বজায় থাকে, তবে এটি ইসরায়েল ও ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাবে বলে মনে করা হয়েছিল। তবে উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলা যুদ্ধবিরতিকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে।