ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিপরীতে আগামী তিন বছরের মধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহের একটি খসড়া পরিকল্পনা হাজির করেছেন টানা তৃতীয় মেয়াদে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
তবে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ মুহূর্তে যে গ্যাস সংকট চলছে, আগামী মার্চে রোজা শুরুর আগেই তার লাঘব হবে বলে আশা দেখিয়েছেন তিনি।
নতুন করে পুরনো দপ্তরের দায়িত্ব পাওয়ার পর মঙ্গলবার সচিবালয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অগ্রগতি, সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রতিমন্ত্রী।
আগামী মার্চ থেকে ‘ডায়নামিক’ পদ্ধতিতে তেলের মূল্য নির্ধারণ, গভীর সমুদ্রে তেল, গ্যাস অনুসন্ধান, দেশীয় কূপ খননে গতিশীলতা এবং মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে জ্বালানি খাতের নতুন চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমরা নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের একটা টাইমলাইন ঠিক করে ফেলেছি। ২০২৬ সালের মধ্যে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন গ্যাস সাপ্লাই থাকবে। এখন আমরা মাত্র ২০ শতাংশ গ্যাস বিদেশ থেকে আমদানি করি। আমরা ৮০ শতাংশ নিজস্ব গ্যাস ব্যবহার করছি।
“আমরা আমদানির গ্যাসের অবস্থাটা খুব বেশি বড় করতে চাই না। আমাদের আমদানির গ্যাস থাকবে। মাঝখানে যে গ্যাপটা থাকবে, সেই গ্যাপটা আমদানির গ্যাস দিয়ে আমরা পূরণ করতে চাই।”
নসরুল হামিদ বলেন, “ভোলায় যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে, নতুন এরিয়ায় যে পরিমাণ গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে, পরবর্তী সময়ে যদি গভীর সমুদ্রে গ্যাস পাওয়া যায়, আমরা মনে করি একটা ভালো অবস্থায় জ্বালানি বিভাগ থাকবে। মনে হচ্ছে আমরা সুখবর পাচ্ছি।”
রাজধানীর অনেক এলাকায় প্রতি শীতেই গ্যাসের চাপ কম থাকে। এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ চেহারা নিয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে ঢাকার অনেক আবাসিক এলাকায় দিনের অধিকাংশ সময় গ্যাস থাকছে না।
গ্যাস না থাকার কারণে ঢাকার আশপাশের শিল্পাঞ্চলের জেনারেটর, বয়লার অচল রয়েছে, ফলে উৎপাদনও বন্ধ রাখার কথা জানাচ্ছেন শিল্প মালিকরা। সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাসের চাপ কমে যাওয়ার কারণে গ্যাসের জন্য অপেক্ষামান গাড়ির প্রতীক্ষার সময়ও দীর্ঘতর হচ্ছে।
দেশে দৈনিক প্রায় চার হাজার মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে তিন হাজার মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গত কয়েক মাস ধরে সরবরাহ করা হচ্ছিল। তবে চলতি জানুয়ারিতে সরবরাহ কমে ২৫০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমেছে।
চলমান এই সংকট নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, গভীর সমুদ্রে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল দুটিতে সংস্কার কাজে হাত দেওয়ার কারণে এখন গ্যাসের সরবরাহ কিছুটা কম।
“আমরা চাই আগামী মার্চে রোজা শুরুর সময়ে গ্যাস এবং বিদ্যুতের সরবরাহ যেন স্বাভাবিক রাখা যায়। মার্চের আগেই এলএনজি টার্মিনাল দুটি পুরোপুরি সচল হয়ে যাবে।”
আসছে সেচ মওসুমে বিদ্যুতের দৈনিক চাহিদা ১৭ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটে উঠতে পারে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত পাওয়ার প্ল্যান্ট রেডি আছে। এবার বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে আমরা এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছি।”a