বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের অপসারণের বিষয়ে এবার ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে, অপসারণের ব্যাপারে তারা মত দিয়েছেন।
তবে বিএনপি এখনো দলীয়ভাবে মতামত জানায়নি। এ ব্যাপারে তারা বিএনপির মতের অপেক্ষায় থাকবেন।
রোববার (২৭ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ছাত্র নেতারা। পরে তারা সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ১২ দলীয় জোটের নেতারা রাষ্ট্রপতির অপসারণের পক্ষে মত দিয়েছেন। বিএনপি নেতারাও বিচ্ছিন্নভাবে এ ব্যাপারে মত দিয়েছেন। তবে তারা সাংগঠনিকভাবে সিদ্ধান্ত এখনো জানাননি। আমরা তাদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি।
হাসনাত জানান, রাষ্ট্রপতি বিদায় নিলে কে আসতে পারেন সে ব্যাপারেও তাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির পদে থাকা নিয়ে একটা অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে, এজন্য রাষ্ট্রপতিকে বিদায় নিতে হবেই বলে মন্তব্য করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, বিএনপি যদি জনগণের মনের চাওয়া বুঝতে পারে তাহলে রাষ্ট্রপতির অপসারণ নিয়ে আন্দোলনে আরেকবার আমাদের সঙ্গে থাকবে। তিনি বলেন, বিএনপিকে আহ্বান জানাবো জনগণের পাল্স বুঝুন। প্রেসিডেন্ট হাউজে যে গোখরা সাপ বসে আছে, তাকে বিদায় করতে সহযোগিতা করুন।
১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, অনেক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রপতির অপসারণ। নীতিগতভাবে তার অপসারণে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে ১২ দল। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে কোনো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়া এই প্রশ্নে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
১২ দলীয় জোটের চেয়ারম্যানের অফিসের এই বৈঠকে জোট নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ আহসানুল হুদা, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মোহাম্মদ ফারুক রহমান, ইসলামিক ঐক্যজোটের মহাসচিব প্রফেসর আব্দুল করিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের (একাংশ) মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম।
ছাত্রদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ, সমন্বয়ক সারজিস আলম, জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন পাটোয়ারী, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, নাগরিক কমিটির পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি আদিব মমিন আরিফ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুউদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি একটি দৈনিকের প্রধান সম্পাদকের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রপতি জানান, শেখ হাসিনার পদত্যাগের কোনো দালিলিক প্রমাণ তার কাছে নেই। রাষ্ট্রপ্রধানের এই বক্তব্যের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয় এবং তার অপসারণ দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইতোমধ্যে বিএনপি-জামায়াতসহ শীর্ষ দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছে।