

যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা অঙ্গরাজ্যে পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রথম নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে শ্বাসরোধ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২৫ মিনিটে আলাবামার হলম্যান কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে ৫৮ বছর বয়সী স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
এর আগে, নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত দেয় মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে আসামি কেনেথ স্মিথের করা আবেদনটি বুধবার খারিজ করে দেওয়া হয়। খবর এপি’র।
মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, ৫৮ বছর বয়সী স্মিথকে অক্সিজেন না দিয়ে ফেসমাস্কের মাধ্যমে বিশুদ্ধ নাইট্রোজেন গ্যাস নাক দিয়ে প্রবাহিত করার মাধ্যমে বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ২৫ মিনিটে আলাবামার হলম্যান কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
২০২২ সালে প্রাণঘাতী ইনজেকশন প্রয়োগ করে প্রথম দফায় কেনেথ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে তখন দণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়।
আলাবামার রিপাবলিকান গভর্নর কে আইভি আলাবামা অঙ্গরাজ্যের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রক্রিয়া নতুন করে পর্যালোচনার ঘোষণা দেন। এর কয়েক মাস পর পর্যালোচনা শেষ হয়। কেনেথ স্মিথকে নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার তারিখ নির্ধারণ করা হয়।
২০২৩ সালের মে মাসে দ্বিতীয় দফায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রচেষ্টা চালানোর এ সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ করেন স্মিথ। তার আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, অঙ্গরাজ্যের স্থানীয় আদালতে স্মিথ বলেছিলেন, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর দ্বিতীয় এ প্রচেষ্টা মার্কিন সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীকে লঙ্ঘন করবে।
ওই সংশোধনীতে নিষ্ঠুর ও অস্বাভাবিক শাস্তি প্রদানের বিরুদ্ধে বলা আছে। তাছাড়া ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে প্রথম দফায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর তাকে মারাত্মক রকমের শারীরিক ও মনস্তাত্ত্বিক যন্ত্রণায় ভুগতে হয়েছে বলেও দাবি করা হয়।
১৯৮৮ সালে এলিজাবেথ সেনেট নামের এক নারীকে খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হন স্মিথ। ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ স্মিথকে ইনজেকশন প্রয়োগ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের অনুমতি দেন। ৯ জন বিচারপতিবিশিষ্ট আদালতের ৩ জন বিচারপতি এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ভিন্নমত জানিয়েছিলেন।
এলিজাবেথ সেনেটকে খুন করার জন্য কেনেথ স্মিথ এবং তার এক সহযোগীকে ভাড়া করেছিলেন ওই নারীর স্বামী চার্লস সেনেট। কৌঁসুলিরা বলেছেন, স্ত্রীর বিমার টাকা পেতে এ ষড়যন্ত্র করেছিলেন চার্লস। পরে তিনি আত্মহত্যা করেন। এ হত্যার ঘটনায় স্মিথের সহযোগীকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১০ সালে এ দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।