ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

রাজধানীর যানজট কমার আশায় দেশের প্রথম উড়াল মহাসড়ক তথা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খুলছে আজ। শনিবার বিকেলেএ সড়কের বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যান চলাচল শুরু হবে রোববার সকাল ৬টা থেকে ।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ফলক উন্মোচনের পর কাওলার র‍্যাম্পে টোল দিয়ে সরকারপ্রধানের গাড়িবহর ফার্মগেট আসবে। এর পর প্রধানমন্ত্রী শেরেবাংলা নগরের পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেবেন।

শুক্রবার সমাবেশস্থল পরিদর্শন শেষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, উড়াল মহাসড়কের একাংশ চালুতে রাজধানীর যানজট কিছুটা হলেও কমে আসবে।

‘সাপোর্ট টু এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে’ প্রকল্পসহ সব মিলিয়ে ১৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে উড়াল মহাসড়ক নির্মাণে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে থেকে রেললাইনের ওপর এবং পাশ দিয়ে বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, মালিবাগ, কমলাপুর হয়ে ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী পর্যন্ত। এতে গাড়ি ওঠানামায় থাকছে ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩১টি র‍্যাম্প।

চালু হতে যাওয়া বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১১ কিলোমিটার। এ অংশের ১৫টি র‍্যাম্পের ১৩টি খুলছে, যার দৈর্ঘ্য ১১ কিলোমিটার। নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষ সেতু বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার এবং র‍্যাম্পে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিতে যান চলতে পারবে। ফলে ১২ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট পৌঁছাবে গাড়ি।

সেতু বিভাগ গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এক্সপ্রেসওয়েতে পথচারী এবং দুই ও তিন চাকার যান চলতে পারবে না। গাড়ি থামানো যাবে না। যাবে না গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলাও। এক যুগের অপেক্ষা যানজটের শহর ঢাকার এক প্রান্ত থেকে বিনা বাধায় অপর প্রান্তে যেতে ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে চুক্তি হয়। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) তিন বছরে নির্মাণ সম্পন্নের পরিকল্পনা ছিল দেশের প্রথম উড়াল মহাসড়ক এবং পিপিপিরও এটি প্রথম প্রকল্প। তবে বেসরকারি বিনিয়োগকারী অর্থায়ন নিশ্চিত করতে না পারায়, জমি ও নকশা জটিলতায় বারবার পিছিয়েছে নির্মাণকাজ। এক্সপ্রেসওয়ের বাকি আট কিলোমিটারের নির্মাণ আগামী বছরের জুনের মধ্যে শেষ করার সরকারি ঘোষণা রয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উদ্বোধন অনুষ্ঠানের তোড়জোড় চলছে। প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর যে র‍্যাম্প দিয়ে উঠবে, সেখানে বসেছে কড়া পাহারা। এক্সপ্রেসওয়ের নিচের এলাকা পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। অন্যান্য র‍্যাম্পও সাজানো হয়েছে উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সাজে।

প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিমানবন্দর থেকে বনানী, বনানী থেকে মগবাজার এবং মগবাজার থেকে কুতুবখালী– এ তিন ধাপে উড়াল মহাসড়ক নির্মিত হচ্ছে। আজ খুলতে যাচ্ছে দ্বিতীয় ধাপের অর্ধেক পর্যন্ত। প্রকল্প প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ জুলাই পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ। তবে খুলতে যাওয়া অংশের কাজ এগিয়েছে ৯৮ শতাংশ। সেতু বিভাগের সচিব মনজুর হোসেন বলেছেন, শুরুতে নানা জটিলতা থাকলেও উড়াল মহাসড়কের বাকি অংশের নির্মাণ নিয়ে আর অনিশ্চয়তা নেই।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...