উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে একটি পার্কে বন্দুক হামলায় কমপক্ষে ৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। হামলায় আহত হয়েছেন আরও এক ব্যক্তি।
এই ঘটনায় পার্কে উপস্থিত মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে রোববার (১৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার মধ্য মেক্সিকোতে একটি ওয়াটার পার্কে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়ে সাতজনকে হত্যা করে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। নিহতদের মধ্যে ছয়জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং অন্যজন শিশু। এতে করে পার্কে উপস্থিতদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এএফপি বলছে, মধ্য মেক্সিকোর কর্টাজার শহরে এই হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। কর্টাজারের সিটি হল থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন নারী, তিন পুরুষ এবং সাত বছর বয়সী এক শিশুকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়। এছাড়া হামলায় আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
মধ্য মেক্সিকোর গুয়ানাজুয়াতো প্রদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মাদক সংক্রান্ত সহিংসতা ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বন্দুকধারীরা ‘হামলা চালাতে’ স্থানীয় সময় শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় লা পালমা সুইমিং রিসোর্টে পৌঁছায়। আক্রমণকারীরা সরাসরি একদল লোকের দিকে গিয়ে গুলিবর্ষণ করে। এরপর পালিয়ে যাওয়ার আগে ঘটনাস্থলে থাকা নিরাপত্তা ক্যামেরা হ্যাঁচকা টান দিয়ে নিয়ে যায় বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
মেক্সিকোর অন্যতম প্রধান টেলিভিশন নেটওয়ার্ক টিভি অ্যাজটেকার ওয়েবসাইটে হামলার পরপরই সেখানকার অবস্থার একটি ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে। ওই ভিডিওতে আতঙ্কগ্রস্ত বেশ কিছু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এবং শিশুদের দেখা যায়। সেসময় তাদের অনেকে সাঁতারের পোশাক পরে ছিলেন।
এএফপি বলছে, স্কুলের বসন্তকালীন ছুটির শেষ দিনে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার এই সুইমিং রিসোর্টটি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের পাশে অবস্থিত এবং আক্রমণের পরে স্থানটিতে বিপুল সংখ্যক সামরিক এবং প্রাদেশিক পুলিশ উপস্থিত হয়।
উল্লেখ্য, মেক্সিকোর গুয়ানাজুয়াতো প্রদেশ একটি সমৃদ্ধ শিল্প অঞ্চল। এছাড়া এখানে মেক্সিকোর সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু পর্যটন গন্তব্যও রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলে একটি শোধনাগার এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি পাইপলাইনও রয়েছে।
কিন্তু সান্তা রোসা দে লিমা এবং জালিস্কো নিউ জেনারেশন কার্টেল নামক দু’টি গ্রুপের মধ্যে বিরোধের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটি মেক্সিকোর অন্যতম সহিংস প্রদেশে পরিণত হয়েছে। অপরাধী এই দলগুলো মাদক ও চোরাই জ্বালানি পাচারের রুট নিয়ন্ত্রণের জন্য একে অপরের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত।
মূলত মাদক চোরাকারবারের জন্য মেক্সিকো কুখ্যাত। ২০০৬ সালে সরকার মাদক কারবারিদের দমনে কেন্দ্রীয় সেনাদের নামানোর পর মাদক সংশ্লিষ্ট সহিংসতায় দেশজুড়ে তিন লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি প্রাণহানি রেকর্ড করা হয়েছে।