ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

ঋণমান নির্ধারণকারী অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান মুডিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান কমিয়েছে। দেশটির ঋণমান তারা ‘স্থিতিশীল’ থেকে অবনমন করে ‘ঋণাত্মক’ করেছে।

ঋণমান কমানোর কারণ হিসেবে মুডিস দুটি বিষয়কে চিহ্নিত করেছে। তা হলো- যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ বেড়ে যাওয়া এবং তার ঋণ নেওয়ার সক্ষমতায় ভাটা পড়া।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক সংবাদে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় বাইডেন প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

কিছুদিন আগে আরেক ঋণমান নির্ণয়কারী সংস্থা ফিচ রেটিংসও দেশটির জাতীয় ঋণমান অবনমন করে। কারণ হিসেবে ফিচও দেশটির জাতীয় ঋণ বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করেছিল। এরপর মুডিস সেই একই পথে হাঁটল।

একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় বাড়ছে এবং আরেক দিকে রাজনৈতিক মেরুকরণ ঘটছে— এসব কারণে দেশটির অর্থনীতিতে একধরনের অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকেরা যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব আয় নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে পথে যাচ্ছে, তাতে রাজস্ব ঘাটতি বিপজ্জনক পর্যায়ে উঠে যাবে। জাতীয় বাজেটের বড় একটি অংশ ব্যয় হবে সুদ পরিশোধে। এ কারণে জাতীয় ঋণ কেবল বাড়তেই থাকবে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণ নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করেছে। চলতি বছর জাতীয় ঋণসীমা স্থগিত নিয়ে কংগ্রেসে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়- একদম শেষ মুহূর্তে উভয় দল এ নিয়ে ঐকমত্যে আসতে না পারলে ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হতে পারত বিশ্বের এই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তখন সেই পরিস্থিতি এড়াতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে রিপাবলিকান দলের প্রস্তাবিত বেশ কিছু ব্যয় কমানোর শর্ত মেনে নিতে হয়, কিন্তু তারপরও পরিস্থিতির বিশেষ উন্নতি হয়নি বলেই দেখা যাচ্ছে।

এখনো যে দেশটির রাজনীতিকদের মধ্যে এ নিয়ে মতৈক্য সৃষ্টি হয়েছে, তা নয়। কংগ্রেসে রাজনীতিকদের মধ্যে এ নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। এ অনিশ্চয়তা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মুডিসের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ফস্টার রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে ২০২৫ সালের আগে রাজস্ব আদায়ের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যে বড় ধরনের নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

সরকারের চলমান অর্থায়নের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ বা প্রতিনিধি পরিষদে অন্তর্বর্তীকালীন ব্যয় পরিকল্পনা পেশের পরিকল্পনা করছে রিপাবলিকান পার্টি। কংগ্রসের এই নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...