

প্রবল বর্ষণ ছাড়াই সুনামগঞ্জে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বৃষ্টি না পড়লেও মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভোর ৫টা থেকে বাড়তে থাকে পাহাড়ি ঢলের পানি। সুরমা নদী উপচে পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় সকাল ৯ টায় বিপদসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার বা ২ দশমিক ২০ ফুট উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। প্লাবিত হচ্ছে নিম্নাঞ্চল। ইতোমধ্যে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন স্থানে। শহরের কাঁচাবাজারে হাঁটুজল।পশ্চিমবাজার, মধ্যবাজার এলাকা তলিয়ে যাচ্ছে। অনবরত পানি ঢুকছে শহরে। আকস্মিক এ বন্যাপরিস্থিতির কারণে দিশেহারা স্থানীয় বাসিন্দারা।
নদ-নদীর পানির বাড়ার গতি দেখে ভীত স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে ঘরবাড়ি ছাড়তে শুরু করেছেন নদী পাড়ের মানুষ। অনেকে উঠেছেন আশ্রয়কেন্দ্রে। পানি এভাবে বাড়াতে থাকবে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।
এদিকে অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে টইটম্বুর জেলার প্রায় সব নদ-নদীন ও নালা। নিম্নাঞ্চলের মানুষের বসতঘরে পানি উঠে গেছে। ছাতকেও বিপদসীমার ৪ দশমিক ৭৬ ফুট উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া বিশ্বম্ভরপুরে বিপদসীমার ৪৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমার পানি। এতে বন্যার আশঙ্কা করছে প্রশাসনও।
পাহাড়ি ঢলের পানিতে আগে থেকেই প্লাবিত ছিল জেলার ছাতক, দোয়ারাবাজার, শান্তিগঞ্জ, জগন্নাথপুর, তাহিরপুরের দেড় শতাধিক গ্রাম। নতুন করে পানি বাড়ায় বিশ্বম্ভরপুর, মধ্যনগর, দিরাইসহ সুনামগঞ্জের প্রায় সবকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ পৌর শহরে বিপদসীমার ৬৭ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমার পানি। ছাতকেও বিপদসীমার ১৪৫ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়াও বিশ্বম্ভরপুরে বিপদসীমার ৪৩ সে.মি উপর দিয়ে সুরমার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসও রয়েছে, সেজন্য পরিস্থিতি ধীরে ধীরে ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, নদীতে পানি টইটম্বুর রয়েছে। আর পানি ধারণ ক্ষমতা নেই কোনও জলাধারের। বন্যার আশঙ্কা প্রবল হয়েছে। এর মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো তৈরি রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীও রয়েছে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ত্রাণ সামগ্রীর জন্য মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হচ্ছে।