নভেম্বর ২৮, ২০২৪

বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জানিয়েছেন, ভারত সরকারের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের একটি তালিকা পাঠানো হবে, যাতে জরুরি মুহূর্তে পেঁয়াজ, চিনি, আদা, রসুন ইত্যাদি আমদানি করা যায়। তিনি বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। ভারত যেকোনো সংকটে বাংলাদেশের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতে থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা। সাক্ষাৎ শেষে এ তথ্য জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। ভারতকে পণ্যতালিকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রতিমন্ত্রী।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানির পরিসংখ্যান তুলে ধরে ভারত সরকারকে বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশেষ করে, ভারতের সেভেন সিস্টার্সের (সাত রাজ্য) সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করে বাংলাদেশি পণ্য, যেমন: হস্তশিল্প, ইলেক্ট্রনিকস, পাটজাত ও চামড়াজাত পণ্য এবং খাদ্যদ্রব্য প্রবেশের সুযোগ তৈরির অনুরোধ জানানো হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য বর্ডার হাটগুলোকে আরও সক্রিয় করতে হবে। মৌলভীবাজারে একটি বর্ডার হাট উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে জানালে ভারতীয় হাইকমিশনার যৌথভাবে উদ্বোধন করতে সম্মত হয়েছেন। নতুন করে বর্ডার হাট চালুর লক্ষ্যে সম্ভাব্য স্থানগুলো চিহ্নিত করতে একসঙ্গে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।

সাক্ষাৎকালে ভারতীয় হাইকমিশনার বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের ব্যাপক সম্ভাবনা আছে বলে জানান। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

উভয় দেশের পণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি বাড়াতে ভারতে বেস্ট অব বাংলাদেশ প্রোডাক্ট এবং বাংলাদেশে বেস্ট অব ইন্ডিয়া প্রোডাক্ট শো আয়োজনের প্রস্তাবও দেন প্রণয় ভার্মা। এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। তিনি এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

পরে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠককালে আহসানুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সম্পর্ক ঐতিহাসিক। সময়ের ব্যবধানে এই সম্পর্ক নতুন মাত্রা লাভ করেছে।

রাশিয়া বাংলাদেশ থেকে আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে থাকে, উল্লেখ করে এ ব্যবধান কমানোর জন্য বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি পণ্য রাশিয়াতে আমদানির আহ্বান জানান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী। রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকস, খাদ্যপণ্য ইত্যাদি পণ্য আমদানি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর জন্য রাশিয়াতে বাংলাদেশি পণ্যের, বিশেষ করে হস্তশিল্প পণ্য প্রদর্শনীর আয়োজন করার আহ্বান জানালে রাষ্ট্রদূত মস্কোতে প্রদর্শনী আয়োজনে সব ধরনের সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দেন।

আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলাদেশ ও রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানিতে সরাসরি বিনিময় ব্যবস্থা চালু করার বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানান।

এ সময় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশে রাশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সহযোগিতার আশ্বাস দেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, আহসানুল ইসলাম টিটু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ায় ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্টিটস্কি। এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...