

‘তখন সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টা হবে। ওই সময় বড় এক বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। আর সঙ্গে সঙ্গে সব কাঁপতে থাকে। ওই সময় আমি মোবাইলে গেম খেলছিলাম। আমার কোচটি সঙ্গে সঙ্গে উল্টে যেতে শুরু করে।’
এভাবেই বলছিলেন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া কিষান ছেত্রি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস নামের ওই যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে একটি মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, আজ সোমবার সকালে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস আসামের শিলচর থেকে কলকাতার শিয়ালদহ যাওয়ার সময় নিউ জলপাইগুড়ির কাছে রাঙ্গাপানি স্টেশনের কাছে একটি মালবাহী ট্রেন ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এই দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান জনসন ছেত্রী ও কিষান ছেত্রী। এর মধ্যে মেঘালয়ের শিলংয়ের বাসিন্দা কিষান যাচ্ছিলেন শিয়ালদহ। সেখানে চাকরি খোঁজার কথা ছিল তাঁর।
কিষান বলেন, ‘ভাগ্যক্রমে আমি কোনো ব্যথাই পায়নি। তবে ব্যাগসহ বিভিন্ন জিনিস হারিয়েছি। আমাদের কোচে ২০ জন যাত্রী ছিল। এর মধ্যে দুজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।’
জনসন ছেত্রী বলেন, ‘মনে হচ্ছিল ভয়াবহ কিছুর মুখোমুখি হয়েছি। ওই সময় ফোনে কথা বলছিলাম। কয়েক মিনিট আমার কোনো জ্ঞানই ছিল না। পরে পাশের কয়েকজন মিলে জ্ঞান ফেরান। আমি বাবা-মাকে জানাই যে, সুস্থ আছি।’
এনডিটিভি জানিয়েছে, পণ্যবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল অতিক্রম করে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে ধাক্কা দেয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের দল এবং অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দিল্লির রেলওয়ে ওয়ার রুম থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানা গেছে।
রেলমন্ত্রী এক্স পোস্টে লিখেছেন—‘দ্রুততার সঙ্গে উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। রেলওয়ে, এনডিআরএফ এবং এসডিআরএফ এক সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ছবিতে দেখা গেছে, ট্রেন থেকে ছিটকে যাওয়া দুইট বগি দুমড়ে মুচড়ে গেছে। একটি কামরা লাইন থেকে ওপরের দিকে উঠে রয়েছে। তার নিচে ঢুকে রয়েছে মালবাহী ট্রেনের কামরা। স্থানীয়রা উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছেন। এলাকায় বৃষ্টিও হচ্ছে।