নভেম্বর ১৫, ২০২৪

শুটিংয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ভারতীয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। শুটিং ফ্লোরে ব্রেন স্ট্রোক হয়েছে এই অভিনেতার।

পরীক্ষায় দেখা গেছে, মিঠুনের ইস্কিমিক স্ট্রোক হয়েছে। অর্থাৎ, মস্তিষ্কের রক্তবাহিকায় ব্লকেজের কারণে মস্তিষ্কের কিছু অংশে রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছিল। হাসপাতালে সেই ব্লকেজ গলিয়ে দেওয়ার ওষুধ দেওয়া হয়েছে দেরি না করেই। আইসিইউতে রয়েছেন অভিনেতা। আপাতত স্থিতিশীল ও সজ্ঞানেই রয়েছেন মিঠুন চক্রবর্তী বলেও জানা গিয়েছে।

পথিকৃৎ বসু পরিচালিত ‘শাস্ত্রী’ সিনেমার প্রেক্ষাপট জ্যোতিষশাস্ত্রের ওপর। এই সিনেমার মূল চরিত্রে মিঠুনের সঙ্গে আছেন অভিনেত্রী দেবশ্রী রায়। এই সিনেমার মধ্য দিয়ে প্রায় ১৬ বছর পর মিঠুন-দেবশ্রীর জুটি বেঁধে পর্দায় আসার কথা রয়েছে। সিনেমাটি প্রযোজনা করছেন অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী।

গত বছর মুক্তি পায় মিঠুন অভিনীত ‘কাবুলিওয়ালা’ সিনেমা। ওই সিনেমায় মিঠুনের অভিনয় প্রশংসা কুড়ায় দর্শক মহলে। এর আগে আসে মিঠুনের হাস্যরসের সিনেমা ‘প্রজাপতি’। এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডসে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পান মিঠুন।

বছরখানেক ধরে কলকাতার বাংলা সিনেমায় ফের আগ্রহী হয়েছেন মিঠুন। কিছুদিন আগে বলেছিলেন, এখন তিনি ভিন্নধর্মী গল্পে কাজ করতে চান। বিশেষ করে হাস্যরসের চিত্রনাট্যকে ইদানিং গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।

অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর পর্দার পেছনের নাম হল গৌরঙ্গ চক্রবর্তী। তার জন্ম ১৯৫০ সালের ১৬ জুন কলকাতার জোড়াবাগানে।

কলকাতা স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন মিঠুন। ৭৪ বছর বয়সী মিঠুনের অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু চলচ্চিত্রকার মৃণাল সেনের হাত ধরে। মৃণালের পরিচালনায় ‘মৃগয়া’ মিঠুনের প্রথম সিনেমা। অভিষেকেই পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এরপরের যাত্রা বলিউড।

কেবল অভিনয়ই নয়, বহু গুণে গুণী মিঠুন মার্শাল আর্টসেও সমান পারদর্শী। অর্জন করেছেন ‘ব্ল্যাক বেল্ট’।

১৯৮২ সালের সিনেমা ‘ডিসকো ড্যান্সার’ এ জিমি চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মিঠুন। জিমি চরিত্রটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ২০০৮ সালে ‘জিমি ঝিনচক, এজেন্ট অফ ডিসকো’ শিরোনামের একটা কমিক প্রকাশিত হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। সেই থেকে মিঠুন খ্যাত হয়েছেন ‘ডিস্কো ড্যান্স্যার’ নামে।

‘ডিস্কো ড্যান্সার’ মুক্তির পর তা পূর্ব সোভিয়েত ইউনিয়নে দ্বিতীয়-সর্বোচ্চ আয়কারী চলচ্চিত্র হয়। এছাড়াও পূর্ব ইউরোপ, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যেও বেশ জনপ্রিয়তা পায়।

১৯৮৯ সালে মোট ১৯ সিনেমায় অভিনয় করে ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ড’ গড়েন মিঠুন। এখনো পর্যন্ত সে রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি। এরপর ১৯৯১ সালে ‘অগ্নিপথ’ সিনেমায় ‘কৃষ্ণন ইয়ের নারিয়াল পানিওয়ালা’ ভূমিকায় অভিনয় করে সেরা পার্শ্ব অভিনেতার পুরস্কার জেতেন অভিনেতা।

‘তাহাদের কথা’ (১৯৯২) ও ‘স্বামী বিবেকানন্দ’ (১৯৯৮) সিনেমার জন্য জেতেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। ক্যারিয়ারে চারশর বেশি সিনেমা করা মিঠুন অভিনয় করেছেন হিন্দি, পাঞ্জাবি, ওড়িয়া, ভোজপুরি, তামিল, তেলেগু ও কন্নড় সিনেমায়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...