ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্তর মৃত্যুর সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। বিনা চিকিৎসায় ৯ ঘণ্টা জরুরি বিভাগে ফেলে রাখায় মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন নিহত দীপ্তর বাবা ও বন্ধুরা।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ সংক্রান্ত মামলায় দীপ্তর বন্ধুদের না জড়ানোর আহ্বান জানিয়ে গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবিও করেন তারা।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্ত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে ঢাকার কুর্মিটোলায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন তার বন্ধুরা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্ঘটনার পর আহত দীপ্তর মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নেয়। পরে নিলয় নামের এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বন্ধে একটি অস্ত্রোপচার ও আইসিইউ সেবা পেতে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু আইসিইউ বেড ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা বাবদ ৭ হাজার টাকা দাবি করা হয়।
দীপ্তর স্বজনরা না থাকায় টাকা না পেয়ে তাকে চিকিৎসাসেবা না দিয়ে জরুরি বিভাগের মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। পরের দিন শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে দুপুর নাগাদ দীপ্তর বন্ধু সঞ্জয় পাল জয়সহ অন্য বন্ধুরা হাসপাতালে যান এবং বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। ওইদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুটি মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় হাসপাতালে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার বন্ধুদের মামলায় জড়ানো হয়েছে। এমনকি দীপ্তর কাতার প্রবাসী বন্ধুকেও আসামি করা হয়।
দীপ্তর বাবা শহীদুল ইসলাম মাজু এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দীপ্তর বন্ধু রাশেদ স্বর্ণ বাবু। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আব্দুল্লাহ সানি, মো. তামিজিদ রায়হান প্রমুখ।