বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি এবং এনভয় টেক্সটাইল লিমিটেড ও শেলটেক গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ ও অর্থপাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংস্থাটির একটি সূত্র জানিয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ব্যাংক কর্মকর্তা থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক কুতুবউদ্দিনের গত ১৫ বছরে সম্পদ বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। তিনি গড়ে তুলেছেন হাউজিং কোম্পানি, টেক্সটাইল ও সিরামিকসহ ত্রিশটির বেশি প্রতিষ্ঠান। কুতুবউদ্দিনের প্রতিষ্ঠান হাউজিং কোম্পানি শেলটেকের মাধ্যমে পুলিশ, বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তা, এনবিআরসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং অসৎ ব্যবসায়ীদের কালো টাকা সাদা করে থাকেন। কালো টাকার মালিকদের কাছেও নির্ভয়ের নাম শেলটেক। মানুষের অবৈধ অর্থ বিনিয়োগের জন্য শেলটেকের কর্মীদের কুতুবউদ্দিন নানা টেকনিক শিখিয়েছেন।
ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশান, বারিধারা, বনানীতে জমি, ফ্ল্যাট বা ফ্লোর স্পেসের মূল্য আকাশছোঁয়া হলেও এসব এলাকায় বহুতল ভবনে স্পেস বিক্রি বা হস্তান্তর দলিলে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে অনেক কম মূল্য দেখিয়ে থাকে কুতুবউদ্দিনের শেলটেক। ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রতি বর্গফুটে যে খরচ হয়, ডেভেলপার কোম্পানি শেলটেক ও ক্রেতা যোগসাজশ করে তার চেয়েও কম দাম দেখাচ্ছে। ক্রেতা ক্রয়কৃত ফ্ল্যাট বা স্পেসের বিনিয়োগ মূল্য আয়কর নথিতে প্রদর্শন করতে হয় না। করলেও প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক কমে নামমাত্র মূল্য প্রদর্শন করার নানা টেকনিক দেখিয়ে দেন কুতুবউদ্দিন এবং তার লিগ্যাল ডিপার্টমেন্ট।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গুলশানে দক্ষিণমুখী লেকের পাড়ে অবস্থিত একটি বহুতল ভবনে ঢাকার একটি চক্ষু হাসপাতালের একজন চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফ্ল্যাট কেনেন। ডাক্তারি পেশা থেকে অপ্রদর্শিত আয়কে বৈধ করার জন্য ৪ হাজার ৩৭৫ বর্গফুটের ফ্ল্যাট ১৩ কোটি টাকায় কিনলেও সাড়ে ৪ কোটি টাকা মূল্যে রেজিস্ট্রেশন নেন। বাকি সাড়ে ৮ কোটি টাকার সম্পদ খুব সহজেই বৈধ করে নিয়েছেন তিনি। আর শেলটেকের মালিক এসব অর্থ বিদেশে পাচার করেছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, আবাসন খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ শেলটেকের প্রতিষ্ঠাতা কুতুবউদ্দিন বিদেশে পাচার করছেন। পর্তুগাল এবং দুবাইয়ে কুতুবউদ্দিনের রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। অন্যদিকে দুবাইয়ে বিনিয়োগ দেখিয়ে গোল্ডেন ভিসা নিয়েছেন কুতুবউদ্দিন। অবৈধ অর্থ বৈধ করতে কুতুবউদ্দিন হুন্ডি চক্র তৈরি করেছে।