নভেম্বর ১৭, ২০২৪

মানুষের আস্থার বড় জায়গা ব্যাংক খাত। এখানে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। তবে মাঝে যে চাপ তৈরি হয়েছিল সে তুলনায় এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ডলারের বাজার পুরোপুরি ঠিক না হলেও আগের চেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে। আমানত তুলতে এসে না পাওয়ার ঘটনা নেই বরং উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়েও আমানত বেড়েছে। ঋণে প্রবৃদ্ধি আছে।

সোমবার (২২ মে) ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এবিবির চেয়ারম্যান ও ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন, এখন থেকে প্রতি তিন থেকে চার মাস পর এবিবি এ ধরনের সংবাদ সম্মেলন করবে। পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন, ডাচ বাংলা ব্যাংকের এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এমডি সৈয়দ ওয়াসেক মো. আলী এবং এবিবির ট্রেজারার ও মিডল্যান্ড ব্যাংকের এমডি মো. আহসানুউজ জামান।

এবিবির চেয়ারম্যান বলেন, করোনা মহামারির ধাক্কা বাংলাদেশ ভালোভাবে সামলে নিয়েছিল। পরবর্তীতে আবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সব জিনিসের দর বেড়ে যায়। যে কারণে বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে ব্যাপক চাপ তৈরি হয়। তবে চাপ ধীরে-ধীরে কাটিয়ে উঠতে শুরু করেছে। এর মানে ব্যাংক খাত একেবারে ঠিক হয়ে গেছে তেমন নয়। আবার সব এলসি খুলতে পারছে, তাও নয়। তবে গত বছরের তুলনায় পরিস্থিতি অনেক ভালো হয়েছে।

সেলিম আর. এফ. হোসেন বলেন, বাণিজ্যনির্ভর মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টি আগে ভালোভাবে দেখা হতো না। বাংলাদেশ ব্যাংকের কড়াকড়ির পর এখন বোঝা যাচ্ছে, বড় ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যের আড়ালে অনেক টাকা পাচার করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে এখন ব্যাংকাররা এসব ভালোভাবে দেখছে। এ নিয়ে গভর্নর বারবার বলছেন, বাণিজ্যের আড়ালে অর্থপাচার প্রায় বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, মাঝে কিছু ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন এবং ডলার বিক্রির ফলে টাকা তারল্যের ওপরও চাপ তৈরি হয়। যে কারণে নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক সহায়তা করেছিল। কোনো ব্যাংকে টাকা তুলে এসে পাননি কিংবা ঋণ চেয়ে না পাওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে হয়তো বড় বিনিয়োগ হচ্ছে না। যে কারণে ঋণ প্রবৃদ্ধি কিছুটা কম আছে।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ খেলাপি ঋণ। খেলাপি ঋণের সঙ্কট কোনো ব্যাংক বা বাংলাদেশ ব্যাংক একা সমাধান করতে পারবে না। এখানে আইনি সংস্কারের দরকার আছে। আদালত ও বিচারক সংখ্যা বাড়াতে হবে। আর্থিক বিষয়ে তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এছাড়া ঋণখেলাপিদের বিষয়ে কঠোর নীতি প্রয়োগ করতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে এবিবি চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে মুদ্রা সরবরাহই উচ্চ মূল্যস্ফীতির একমাত্র কারণ বলে মনে হয় না। এখানে সরবরাহ ব্যবস্থায় সংস্কারের দরকার আছে। কেননা, এখন তো বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য কমছে। অথচ আমাদের চিনি কিনতে হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। আর উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো সুদহার অনেক বাড়িয়েছে। আগামী জুলাই থেকে বাংলাদেশে সুদহারের নতুন ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। তবে এখানে সুদহার পুরোপুরি বাজারভিত্তিক করলে সমস্যা আছে। আবার বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিলে কোথায় গিয়ে ঠেকবে বোঝা দায়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেভাবে ধীরে-ধীরে বাজারভিত্তিক করছে সেটি ভালো পন্থা

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...