সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪

বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রাক্তন ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ এবং দেশের নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানগুলোই সিদ্ধান্ত নিতে পারে কীভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে কোনো রায় দেওয়ার অধিকার আর কারো নেই।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন প্রতিটি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি দেশের নিজস্ব নির্বাচন পদ্ধতি ও ব্যবস্থা আছে। আপনাদের কাছে সবকিছু আছে। জনগণ এই সিদ্ধান্ত নেবে, তা না হলে স্বাধীনতা ও সার্বভৌম জাতির অর্থ বা ধারণা কী।’

সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ভারত-বাংলাদেশ: প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের রোল মডেল’ শিরোনামে জহুর হোসেন চৌধুরী মেমোরিয়াল লেকচার-২০২৩-এ দেওয়া বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় প্রাক্তন এই ভারতীয় কূটনীতিক বলেছেন, কে নির্বাচিত হবেন সেই সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশের জনগণ, আর প্রতিষ্ঠানগুলো সিদ্ধান্ত নেবে কোন উপায়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এই প্রচেষ্টার জন্য আপনাদের শুভ কামনা করি।’

দৈনিক ভোরের কাগজ ঢাকার একটি হোটেলে ‘ভারত-বাংলাদেশ: প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের রোল মডেল’ বিষয়ক জহুর হোসেন চৌধুরী স্মারক বক্তৃতা-২০২৩ আয়োজন করে।

পঙ্কজ বলেন, ভারতীয়রা চায় নির্বাচন প্রক্রিয়া জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী হোক এবং এটি শান্তিপূর্ণভাবে হোক; যাতে পরিস্থিতি অস্থিতিশীলতার দিকে না এগোয়।

তিনি বলেন, ভারতও একটি বড় গণতান্ত্রিক দেশ, কিন্তু অন্য দেশে গণতন্ত্র রপ্তানি করছে না।

তিনি আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচনের সময় সামনের সেরা পথটি নির্বাচন করবে।

পঙ্কজ বলেন, ‘আপনাদের প্রতিষ্ঠান আছে। আপনারা যেটা করতে পারেন, নিজেদের উপর আস্থা রাখুন এবং নির্বাচনের ফলাফল যা আসে তা মেনে নিন। আমি মনে করি না যে বাংলাদেশ বা অন্য কোনো দেশে কীভাবে নির্বাচন করা উচিত তা নিয়ে ভারতসহ বিশ্বের কোনো দেশের কথা বলা উচিত।’

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক রাষ্ট্রদূত তারিক করিম।

গত ১৫ বছরে দুই দেশ একসঙ্গে যে মাইলফলক অর্জন করেছে তা তুলে ধরে পঙ্কজ শরণ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবসময়ই ‘অসমাপ্ত এজেন্ডা’ থাকবে।

প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত সম্পর্কটিকে সফল বলে বর্ণনা করার পিছনে চারটি কারণ উল্লেখ করে বলেন, উভয় পক্ষের রাজনৈতিক সদিচ্ছা রয়েছে। ‘রাজনৈতিক ইচ্ছা সাফল্যের জন্য অপরিহার্য শর্ত।’

তিনি আরও বলেন, উল্লেখযোগ্যভাবে কম সংখ্যক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও সীমান্তে শান্তি রয়েছে এবং নিরাপত্তার উদ্বেগ দূর হয়েছে।

ভবিষ্যতের সম্পর্কে পঙ্কজ বলেন, দুই দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা হ্রাস, জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, নীল অর্থনীতির অন্বেষণের সুযোগ এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে কাজ করতে হবে। ‘আমাদের সরাসরি সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে।’

তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যেই অবৈধ অভিবাসনের সমস্যা রয়েছে এবং উভয় পক্ষেরই এ বিষয়ে অকপটে কথা বলা উচিত।

তারিক করিম অমীমাংসিত সমস্যা সমাধানে একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, অভিন্ন নদীগুলোর সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি জলবায়ু ফ্রন্টেও কাজ করার সুযোগ রয়েছে। ‘এখনও কিছু সমস্যা আছে। আমাদের সেগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে।’

তিনি বলেন, ভারতে যা হয় তা বাংলাদেশকে প্রভাবিত করে এবং বাংলাদেশে যা ঘটে তা ভারতকে প্রভাবিত করে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *