বাংলাদেশে নরফান্ড ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের আওতায় নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে সহায়তা দেবে নরওয়ে।বাংলাদেশে জলবায়ু বিনিয়োগ তহবিলের (সিআইএফ) যাত্রা শুরু করার লক্ষ্যে গতকাল সোমবার (১৬ অক্টোবর) ঢাকার নরওয়েজিয়ান দূতাবাস, নরফান্ড এবং দ্য নর্ডিক চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ইন বাংলাদেশ (এনসিসিআই) এক সেমিনারের আয়োজন করে।
নরওয়ে দূতাবাস জানায়, নরফান্ড দ্বারা পরিচালিত ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (সিআইএফ) বৈশ্বিক জ্বালানি সংরক্ষণে নরওয়ের একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। ২০২২ থেকে ২০২৭ সালের জন্য সিআইএফ ১০ বিলিয়ন নরওয়েজিয়ান ক্রোনার বরাদ্দ করেছে যেন উন্নয়নশীল দেশগুলো নবায়নযোগ্য জ্বালানি স্বল্প-কার্বন প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করে কয়লা এবং অন্যান্য জীবাশ্ম জ্বালানি শক্তি থেকে কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমিয়ে আনতে পারে। এ নির্বাচিত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং উইন্ড ফর্মের মতো বড় পরিসরের প্রকল্পের পাশাপাশি ছাদে সোলার ইনস্টলেশনের মতো ছোট প্রকল্পের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে তহবিলটি সহায়তা দেবে। এরই সঙ্গে সিআইএফ জলবায়ু প্রভাবের সাথে টেকসই প্রযুক্তি যেমন, শক্তি সঞ্চয় এবং প্রেরণের পরিকাঠামোতে বিনিয়োগ করবে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিক্টার-সেভেন্ডসেন বলেন পুঁজির অ্যাক্সেস-নবায়নযোগ্য জ্বালানি শক্তি শিল্পের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্ভরযোগ্য এবং অভিজ্ঞ আর্থিক অংশীদার নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন ও উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি। তিনি প্রতিবন্ধকতাগুলো অপসারণ এবং শাসন ও স্বচ্ছতা, সু-নিয়ন্ত্রিত বাজার এবং স্মার্ট ইনসেনটিভ বাস্তবায়ন ও সঠিক ধরনের বিনিয়োগের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য একটি গতিশীল ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে দেশটি তার মোট দেশজ উৎপাদনের দুই পার্সেন্ট হারাতে চলেছে। বাংলাদেশের শুধু জলবায়ু প্রভাব মোকাবিলায় বিনিয়োগের প্রয়োজনই নয়, জ্ঞান ও সক্ষমতা তৈরিতে প্রযুক্তিগত সহায়তাও প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে নরফান্ডের ক্লাইমেট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড একটি বড় সহায়ক হতে পারে।
এনসিসিআই-এর সভাপতি তাহরিন আমান বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত একটি গভীর পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে, যা ঐতিহ্যগত জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসে স্থানান্তরিত হচ্ছে৷ এই পরিবর্তন কেবল আমাদের জ্বালানি শক্তির উৎসের পরিবর্তন নয়; এটি একটি টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য আমাদের সংকল্পের প্রমাণ।
তিনি বলেন, মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা সবুজ, সমৃদ্ধ এবং টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি আমাদের দেশের অবিচল
অঙ্গীকার প্রতিফলিত করে। বছরের পর বছর ধরে, এনজিও, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত এবং জ্বালানি বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন অংশীজনরা গ্রিন এনার্জির এজেন্ডাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তাদের গভীর একনিষ্ঠতা, আবেগ ও সম্মিলিত দৃষ্টি আমাদের গ্রিন এনার্জিতে উত্তরণের পেছনে চালিকা শক্তি।