ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ২০০২ সালের জুনে বাংলাদেশ ব্যাংকের এর অধিনে ‘এন্টি মানি লন্ডারিং ডিপার্টমেন্ট বা এএমএল’ নামে গঠিত হয়। এন্টি মানি লন্ডারিং ডিপার্টমেন্ট এর কাজের অধিকতর স্বাধীনতা এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১২ সালে একটি আইন পাশ করা হয় যেটি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ নামে পরিচিত। উক্ত আইনের ২৪ ধারা মোতাবেক এন্টি মানি লন্ডারিং ডিপার্টমেন্ট এর নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট রাখা হয়।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) হচ্ছে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন প্রতিরোধে গঠিত অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে সমন্বয়কের ভূমিকা রাখে বিএফআইইউ। বিএফআইইউ বিভিন্ন সময়ে ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট বা গোয়েন্দা প্রতিবেদন তৈরি করে বিভিন্ন সংস্থার কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পাঠায়। আবার বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমেও কাজ করে।

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এর প্রধান হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর পদমর্যাদার কর্মকর্তা। ডেপুটি গভর্নরের অধিনে একজন নির্বাহী পরিচালক এবং একজন মহাব্যবস্থাপক। মহাব্যবস্থাপক এর অধিনে থাকবে দুইজন উপ-মহাব্যবস্থাপক। একজন উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রশাসনিক উইং, নীতি নির্ধারণ ও আন্তর্জাতিক উইং, এবং বিশ্লেষণ উইং দেখেন। অপর উপ-মহাব্যবস্থাপক পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধান উইং এবং অভিযোগ তদারকি ও তথ্য বিনিময় উইং তত্ত্বাবধায়ন করেন।

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ ( ২০১২ সনের ৫ নং আইন ) তে যা উল্ল্যেখ রয়েছে –

২৪। 1[(১) এই আইনে প্রদত্ত ক্ষমতা ও কার্যাবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (Bangladesh Financial Intelligence Unit) নামে একটি পৃথক কেন্দ্রীয় সংস্থা থাকিবে, যাহার-

(ক) একটি পৃথক সীল মোহর ও লেটার হেড প্যাড থাকিবে;

(খ) একটি স্বতন্ত্র কার্যালয় বাংলাদেশ ব্যাংকে অবস্থিত হইবে;

(গ) কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় অফিসস্থান, লোকবল, তহবিল, প্রশাসনিক সুবিধাসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সরবরাহ করিবে;

(ঘ) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর পদমর্যাদার একজন সার্বক্ষণিক প্রধান কর্মকর্তা থাকিবে, যিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এর নেতৃত্বে গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নির্ধারিত শর্তে সরকার কর্তৃক চুক্তিভিত্তিক বা অন্যবিধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হইবেন;

(ঙ) প্রধান কর্মকর্তা যাবতীয় প্রশাসনিক বিষয়ে গভর্নর, বাংলাদেশ ব্যাংক-এর পূর্বানুমোদন গ্রহণ করিবেন;

(চ) প্রধান কর্মকর্তা মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা, নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারের সহিত পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন;

(ছ) প্রধান কর্মকর্তার চাহিদার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক উহাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকতা ও কর্মচারী পদায়ন করিতে পারিবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী তিনি সরকার বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা হইতে প্রেষণে বা অন্যবিধভাবে কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগের জন্য সরকারকে অনুরোধ করিতে পারিবে; এবং

(জ) প্রধান কর্মকর্তার চাহিদার প্রেক্ষিতে উহাতে চুক্তিভিত্তিক পরামর্শক নিয়োগ করা যাইবে।]

(২) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত সংস্থাসমূহ বা অন্য কোন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা তদ্‌কর্তৃক সংরক্ষিত বা সংগৃহীত তথ্যাদি বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে স্বপ্রণোদিতভাবে বা অনুরোধের সূত্রে সরবরাহ করিবে।

2[(৩) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন সংক্রান্ত তথ্যাদি অনুরোধের প্রেক্ষিতে বা প্রয়োজন মোতাবেক স্ব-উদ্যোগে সরকারি অন্য কোন সংস্থাকে সরবরাহ করিতে পারিবে।]

(৪) এই আইনের বিধান অনুযায়ী অন্য কোন দেশের সহিত সম্পাদিত কোন চুক্তি বা ব্যবস্থার অধীন সংশ্লিষ্ট দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে মানি লন্ডারিং বা সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন বা কোন সন্দেহজনক লেনদেন সম্পর্কিত তথ্যাদি সরবরাহ করিবে এবং অন্য কোন দেশের নিকট হইতে অনুরূপ তথ্য চাহিতে পারিবে।

(৫) উপ-ধারা (৪) এ বর্ণিত চুক্তি বা ব্যবস্থা ছাড়াও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট ক্ষেত্রমত, স্বপ্রণোদিতভাবে অন্য দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে তথ্য সরবরাহ করিতে পারিবে।

 

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...