নভেম্বর ২৩, ২০২৪

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্ব পারস্পরিকভাবে উভয় দেশের জন্য সহায়ক। পাশাপাশি এ দুই দেশের পারস্পরিক বিশ্বাস অত্যন্ত গভীরে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ‘ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল-এর উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে দেওয়া প্রারম্ভিক ভাষণে একথা বলেন।

এ সময় বিভিন্ন খাতে বিশেষ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, আইসিটি এবং অবকাঠামো খাতে মার্কিন কোম্পানিগুলোর বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বিশ্বস্ত উন্নয়ন অংশীদারদের একজন এবং আমাদের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে অবদান রেখে চলছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের জন্য এফডিআই এবং রপ্তানি বাজারের একক বৃহত্তম উৎস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর প্রবৃদ্ধির গতিপথকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার বিশ্বাস মার্কিন কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, আইসিটি, অবকাঠামো, হালকা প্রকৌশল এবং ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইল শিল্প, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং সিরামিকের মতো সম্ভাব্য এবং উৎপাদনশীল খাতে আরও বেশি সুবিধা নেবে এবং বিনিয়োগ করবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের সবচেয়ে উন্মুক্ত প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতি রয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী জানান, তার সরকার নাগরিকদের জন্য দীর্ঘমেয়াদী টেকসই প্রবৃদ্ধির কৌশল অনুসরণ করছে। এই টেকসই কৌশল বিশ্ব অর্থনীতিবিদ ও সংস্থাগুলো স্বীকার করেছে।

ইউএস-বাংলাদেশ এনার্জি টাস্কফোর্স এবং ইউএস-বাংলাদেশ ডিজিটাল ইকোনমি টাস্কফোর্স তাদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার মাধ্যমে উভয় দেশের কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা আরও গভীর করতে অবদান রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় পরিবেশ নিশ্চিত করেছে যার মধ্যে রয়েছে একটি উদারীকৃত শিল্পনীতি, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস, ১০০% বিদেশি মালিকানার জন্য ভাতা, সহজ প্রস্থান নীতি, ১৫ বছরের কর অব্যাহতি, আমদানি করা যন্ত্রপাতির জন্য ভ্যাট অব্যাহতি, সুগমিত পরিষেবা এবং আরও অনেক কিছু।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পায়নের সুবিধার্থে সারা দেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, ১০৯টি হাই-টেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক এবং আইটি প্রশিক্ষণ ও ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ’

গত বছর চালু হওয়া পদ্মা সেতু দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপন করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিগগিরই মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকায় মেট্রো রেলের অংশ বিশেষ এবং চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো আরও কিছু মেগা প্রজেক্ট চালু হবে।’

তিনি বলেন, ‘এই অবকাঠামোগুলো সংযোগ এবং অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য উভয়কেই আরও প্রসারিত করবে, একইভাবে প্রবৃদ্ধির জন্য অনুঘটক হিসাবেও কাজ করবে।’

১৭০ মিলিয়ন মানুষের বাজার উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় তিন বিলিয়ন গ্রাহকের বাজারের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে। এ কারণেই সরকার প্রতিবেশীদের সঙ্গে কানেকটিভিটির ধারণাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে এবং , যা বর্তমানে বাস্তবে রূপ নিচ্ছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট, দক্ষিণ এশিয়া ইউ.এস. চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত (অব.) অতুল কেশপ, এক্সেলারেট এনার্জি (বোর্ড চেয়ার এবং মিশন প্রধান) সভাপতি, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভেন কোবোস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...