ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু বলেছেন, আমাদের পুঁজিবাজার আমাদেরকেই দাঁড় করাতে হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ পুঁজিবাজারের মূল কর্ণধার। এজন্য আমরা সকলকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই। তাহলে দেশের পুঁজিবাজার এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে পুঁজিবাজারকে এগিয়ে নিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর মতো নেতৃত্ব বিরল। তার মতো শক্তিশালী কণ্ঠ, তার মতো শক্তিশালী নেতৃত্ব, এমন আর বাংলাদেশের মাটিতে আমি দ্বিতীয়টি দেখিনি।

আজ সোমবার (১৪ আগস্ট) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ও ১৫ আগস্টের সকল শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসইর নিজস্ব ভবনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ড. হাসান বাবু এসব কথা বলেন।

ডিএসই চেয়ারম্যান বলেন, এ দেশে সবচেয়ে বড় অভাব দেশপ্রেম ও সততার। একটা দেশের মানুষের মাঝে যদি দেশপ্রেম থাকে তাহলে নিজে থেকেই তার মাঝে সততা চলে আসবে। আজ এই স্বদেশ প্রেমের ঘাটতির কারণেই আমরা বঙ্গবন্ধুকে হারিয়েছি।

ডিএসইর এই চেয়ারম্যান বলেন, তবুও আমরা সৌভাগ্যক্রমে আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কে পেয়েছি। বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাঝে আমি যে মিল খুঁজে পাই তা হলো দেশপ্রেম,  প্রচন্ড দেশপ্রেম। বঙ্গবন্ধু আর প্রধানমন্ত্রী দুজনেরই জীবনযাপন খুবই স্বাভাবিক।  তাদের দুজনেরই মনে বিন্দুমাত্র লোভ নাই।

ড. হাফিজ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সকল সিদ্ধান্ত দেশের মানুষ আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করছেন। দেশের মানুষ চায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আরও সামনে এগিয়ে যাক। কারণ দেশের মানুষ বিশ্বাস করেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন তা বাস্তবায়ন কেবলমাত্র শেখ হাসিনার মাধ্যমেই বাস্তবায়ন সম্ভব।

পুঁজিবাজার নিয়ে তিনি বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে এটুকু আশ্বাস দিতে পারি, আমরা আপনাদের সেবা দিতেই এখানে বসে আছি। আমরা সবসময় আপনাদের কথা ভাবি। একদিন-দুদিনে তো আমরা আর কিছু করতে পারবো না, কিন্তু আমরা সবসময় আপনাদের জন্য আপনাদের পাশে নিয়ে কাজ করতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা এখানে এসেছি দায়িত্ব পালন করতে। এখান থেকে কি পেলাম সেটা বড় বিষয় না। আজ আমাদের পুঁজিবাজার পিছিয়ে থাকার অনেকগুলো কারণ আছে। উন্নত দেশগুলোতে পুঁজিবাজার এর উপর অর্থনীতি নির্ভর করে। তাই আমি বিশ্বাস করি উন্নত দেশের মতো যে অর্থনীতির স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী দেখছেন, সেখানে পুঁজিবাজারকে নিয়েই তিনি অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় কথা ভাবছেন।

এ সময় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের পর দেশের অবকাঠামো যখন ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিলো, তখন যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশের সর্বহারা ২০ লাখ মানুষের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা ছিল বিশাল চ্যালেঞ্জ, এর মাঝেও বঙ্গবন্ধু পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা করলেন। উনার নেতৃত্বে আমরা সংবিধান পেলাম, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা পেলাম। আর দেশের আজকের যতো পরিকল্পনা সব পরিকল্পনার বীজ তখনই বুনেছিলেন বঙ্গবন্ধু।

তিনি বলেন, ববঙ্গবন্ধুর শাসনামলে নমিনাল জিডিপি ২৮ শতাংশ হারে বেড়েছিলো। বঙ্গবন্ধু মারা য়াবার পর যা ৬ শতাংশে নেমে আসে। আমরা অনেক ভাগ্যবান উনার দুই কন্যা ভাগ্য ক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন। দেশে ফিরে শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করলেন, সেই থেকে আমরা আবারও অর্থনৈতিক ভাবে উন্নয়ন করেছি, বিদ্যুৎ খাতের চরম সংকট থেকে তিনি জাতিকে মুক্ত করলেন।

আসিফ ইব্রাহিম আরও বলেন, আমরা আগামী ১০০ বছরের ডেল্টা প্ল্যান পর্যন্ত করার চিন্তা করছি। এটা তখনই সম্ভব, যখন দেশের স্বাধীনতার পক্ষের রাজনৈতিক শক্তি দেশ শাসন করে। আমরা আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মৃতিকে তখনই সম্মান দেখাতে পারবো, যখন আমরা দূর্নীতিকে পরাস্ত করে, স্বাধীনতার চেতনাকে জাগ্রত করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।

ডিএসইর সাবেক চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে অনেক নেতা ছিলেন, ভবিষ্যতেও হবেন। এই নেতাদের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধু করার কারণ উনার আগে আর কোনো নেতা একা পুরো বাঙ্গালীকে কোন একটি বিষয় নিয়ে ঐক্যবদ্ধ করতে পারেন নাই। বঙ্গবন্ধুর এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই আজ আমরা স্বাধীন হতে পেরেছি।

সিএমএসএফ চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়েই বঙ্গবন্ধুর জন্য একটি স্থান রয়েছে। বিদেশে আমি যখনই গিয়েছি, তখনই আমি দেখেছি বাংলাদেশ শুনলেই সবাই বলতো শেখ মুজিবুর রহমানের কথা। বাংলাদেশ মানেই যেন শেখ মুজিবুর রহমান।

অর্থসূচক সম্পাদক এবং ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু এবং ১৫ আগস্ট শহীদ সকলের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, ১৯৭৫ এ যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তারা ভেবেছিলেন ব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার মধ্য দিয়েই তার স্বপ্নের অবসান ঘটবে, তার আশার অবসান ঘটবে। কিন্তু আসলে সেটি ঘটেনি। আজ বঙ্গবন্ধু নেই, কিন্তু তার যে স্বপ্ন, তার যে আদর্শ, তার যে চেতনা তা সঞ্চারিত হয়েছে বাঙালি জাতীর মধ্যেই। যার ফলেই ১৯৭১ এর যুদ্ধ বিদ্ধস্ত এই দেশ আজ সমৃদ্ধির দারপ্রান্তে।

তিনি বলেন, যদি ১৯৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে দেশের অগ্রযাত্রাকে লাইনচ্যুত করা না হতো তবে দেশ আজ বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে আরও এগিয়ে যেত।

ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) প্রেসিডেন্ট রেফায়েত উল্লাহ মৃধা বলেন, দেশের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে ভিশনারি নেতৃত্ব এবং ১৯৭১ এ অর্জিত স্বাধীনতার জন্য। জাপানিজরা গবেষণা করে দেখেছে বাংলাদেশ ভবিষ্যতের বিজনেসের হাব। তারা গবেষণা করে দেখেছেন বাংলাদেশ সামনে অনেক এগিয়ে যাবে। জাপানিজরা ইতিমধ্যে কক্সবাজার জোনে অনেক ধরণের বিনিয়োগ করেছেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএসইর ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুর রহমান মজুমদার।

এছাড়াও আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আহমেদ রশীদ লালী, প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট ফরিদা ইয়াসমিন, ডিবিএ প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি রোজারিও।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...