নভেম্বর ২২, ২০২৪

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে কোনো পণ্যেই যেন স্বস্তি নেই। আজ দাম কমে তো কাল আবার বাড়ে। একই অবস্থা পেঁয়াজের বাজারেও। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত ৫ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানায়, পেঁয়াজ আমদানিতে বিদ্যমান ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা বহাল থাকবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।

আর গত ১৩ সেপ্টেম্বর অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ন্ত্রণে পেঁয়াজ রফতানির ওপর বেঁধে দেয়া ন্যূনতম শুল্ক প্রত্যাহার করেছে ভারত। এ সিদ্ধান্তের ফলে পেঁয়াজ আমদানির ক্ষেত্রে নির্ধারিত মূল্য পরিশোধের শর্ত আর নেই। একই সঙ্গে কমানো হয়েছে রফতানি শুল্কও। রফতানিতে ৪০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করে দেশটি। প্রতি টন পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে এতদিন সর্বনিম্ন ৫৫০ ডলার মূল্যের যে শর্ত ছিল, সেটিও দেশটির সরকার প্রত্যাহার করে।

এর পর পরই শুরু হয় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি। পাশাপাশি পাকিস্তান ও মিশর থেকেও আসতে থাকে পেঁয়াজ। এতে সামান্য কমে দাম। তবে বর্তমানে আবারও বাড়তে শুরু করেছে দাম। ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা খেয়ালখুশি মতো পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করে। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরেও বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে দরকার কঠোর মনিটরিং ব্যবস্থা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, দেশি পেঁয়াজের মৌসুম প্রায় শেষের দিকে। নতুন পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত বাজার একটু চড়াই থাকবে। পাইকারিতে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ৪-৮ টাকা বেড়ে গেছে জানিয়ে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী রাকিবুল জানান, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১২০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯৬-৯৮ টাকায়। ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি থাকলে দাম কিছুটা নাগালে থাকতে পারে।

আর খুচরা ব্যবসায়ী সাজ্জাদ জানান, কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে খুচরায় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩০-১৩৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এছাড়া মিশরীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ টাকায়।

তবে আড়ত পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম আগের মতোই আছে উল্লেখ করে আমদানিকারক এবং রাজধানীর শ্যামবাজার পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মাজেদ বলেন, আড়তে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১০৫-১১০, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০-৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বাজারে কমে আসছে। এতে কিছুটা সরবরাহ সংকট তৈরি হচ্ছে। কিন্তু এখনই তেমন দাম বাড়ার কথা না। এটা খুচরা পর্যায়ের কারসাজি।

বাজারে সব ধরনের পেঁয়াজের সরবরাহ থাকলে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকায় দামও বেশি বলে জানান আবদুল মাজেদ। তিনি বলেন, ‘মানুষ বাজারে গিয়ে দেশি জিনিসটাই খোঁজে। আমি নিজেও ঘরে দেশি পেঁয়াজ খাবার জন্য আনি। এতে চাহিদা বেশি হওয়ায় দেশি পেঁয়াজের দাম সব সময়ই অন্য পেঁয়াজের তুলনায় বেশি থাকে। তাছাড়া, দেশি পেঁয়াজের মৌসুমও প্রায় শেষের দিকে। আগামী দুই মাস পর বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ আসা শুরু হলে দাম কমতে শুরু করবে।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...