ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় সিমেন্টবাহী একটি পণ্যবাহী ট্রাক, অটোরিকশা ও প্রাইভেটকারের ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ জনে। নিহত ১৪ জনের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে।
এর আগে, বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির গাবখান সেতু এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন, সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি যে গাড়িগুলোকে চাপা দিয়েছে তাদের সবাই বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। ঝালকাঠি সদর উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ কামাল হোসেন বলেন, দুর্ঘটনায় আমার ছোট ভাই দশম শ্রেণির ছাত্র আতিকুর রহমান সাদি নিহত হয়েছেন। আমার ভাই চোখের সামনেই মারা গেল। আমি কিছুই করতে পারিনি।
কান্নায় ভেঙে পড়ে কামাল বলেন, ব্যাটারিচালিত চারটি ইজিবাইক ও একটি মাইক্রোবাস যোগে প্রায় ২৫ জন নিয়ে গাবখান ইউনিয়নের ওস্তাখাল গ্রামে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। আমার শ্যালিকার বিয়ের বউভাতের আয়োজন করা হয়েছিল। যাওয়ার পথে দুপুর দেড়টার দিকে গাবখান টোলে আমাদের গাড়িগুলো টোল দিচ্ছিল। এ সময় সেতুর দিক থেকে সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক এসে আমাদের গাড়ি, পথচারী ও টোল আদায় কর্মীদের চাপা দেয়। আমাদের আনন্দ মুহূর্তে বিষাদে পরিণত হয়।
শেখেরহাট ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আতফি আহম্মেদ বলেন, আমার ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ কামাল হোসেনের শ্যালিকার বৌভাতে সবাই যাচ্ছিল। কামাল হোসেন আমাকে জানিয়েছে, মোট ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১০ জন কামালের নিজের ও শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজন।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার কাজ শেষ করা হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল থেকে ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িগুলোকে চাপা দেয়।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক তারাহ গুল নিঝুম জানান, ঝালকাঠির গাবখান সেতু টোলপ্লাজায় সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক তিনটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে চাপা দেয়। দুর্ঘটনার তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমিনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।