নভেম্বর ৯, ২০২৪

স্থবির হয়ে পড়েছে প্রবাসীদের এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) কার্যক্রম। প্রবাসীদের গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বিভিন্ন দেশে এনআইডি কার্যক্রম চালু করে, যা এতদিন অব্যাহত ছিল। কিন্তু সরকার পতনে এ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, শেখ হাসিনা সরকারের বিদায়ের পরই প্রবাসীদের এনআইডি আবেদন যেমন কমেছে, তেমনি আবেদনের তদন্তও হচ্ছে না। এ ছাড়া নতুন করে উদ্বোধন ও কার্ড বিতরণ কার্যক্রমও স্থগিত হয়েছে। এর আগে গত ২৩ জুলাই সৌদি আরবের রিয়াদে ও ২৪ জুলাই জেদ্দায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধন করার কথা ছিল। নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বলে সব প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে কর্মসূচি বাতিল করা হয়। এ ছাড়া পরিকল্পনা নেওয়া অন্যান্য দেশেও কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।

ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, ইতালি, কুয়েত, কাতার, সৌদি আরব ও মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, কুয়েত, কাতার, যুক্তরাজ্য ও মালয়েশিয়ায় স্মার্টকার্ড বিতরণ উদ্বোধনও হয়েছে। পরে পর্যায়ক্রমে ওমান, বাহরাইন, জর্ডান, সিঙ্গাপুর, লেবানন, লিবিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মালদ্বীপ ও কানাডাতে এনআইডি কার্যক্রম হাতে নেওয়ার কথা রয়েছে।

ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের পটপরিবর্তনের ফলে দূতাবাসগুলোতেও চলছে অস্থিরতা। অনেক দেশ থেকে কূটনৈতিকদের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। আর প্রবাসে এনআইডি কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে দূতাবাস নির্ভর। অন্যদিকে যাদের আবেদন এসেছে, তাদেরগুলোর তদন্ত কার্যক্রমেও দেখা দিয়েছে স্থবিরতা। কেননা, নির্বাচন কমিশন পরিবর্তন নিয়ে যেমন চলছে গুঞ্জন, তেমনি কর্মকর্তাদের ভেতরেও সহিংসতায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সরবরাহ কার্যক্রমে আবেদন পড়েছে ২২ হাজারের মতো। এর মধ্যে তদন্ত শেষে অনুমোদিত আবেদন পাঁচ হাজারের মতো। এদের বিরাট অংশের তদন্ত এখনও সম্পন্ন হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা পেয়ে কেএম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০১৯ সালে প্রবাসে এনআইডি সরবরাহের উদ্যোগ হাতে নেয়। এরপর ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের অনলাইনে ভোটার করে নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করে ইসি। এর আগে ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসীদের মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। তার আগে একই বছরের ৫ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার অংশ হিসেবে অনলাইনে আবেদন নেওয়ার কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। এরপর সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর ও মালদ্বীপে থাকা বাংলাদেশিদের জন্যও এ সুযোগ চালু করা হয়। সেসময় অনলাইনে আবেদন নিয়ে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপজেলা থেকে যাচাই করে সত্যতা পেলে সংশ্লিষ্ট দেশে দূতাবাস থেকে এনআইডি সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল। এরপর করোনা মহামারির কারণে থমকে যায় দূতাবাসের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা।

কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সেই কার্যক্রমকে ফের উজ্জীবিত করেন। এক্ষেত্রে আগের আবেদনগুলো পাশ কাটিয়ে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করেন তারা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...