বহুকাল ধরে পাকিস্তান ক্রিকেটের সঙ্গে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ তকমা সেঁটে রয়েছে। এই দেশটির ক্রিকেটে কখন যে কী হয়ে যায়, তা আঁচ করা কঠিন। বর্তমান সময়ে ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে দেশটির ক্রিকেট। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ার পর যেন অস্তিত্ব সংকটেই পড়ে গেছে পাকিস্তান ক্রিকেট। এ সময়ে দলের সঙ্গে কোনোভাবে যুক্ত না থাকায় নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন দেশটির কিংবদন্তি ক্রিকেটার ওয়াসিম আকরাম।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছেন আকরাম। একইসঙ্গে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে পাকিস্তান দল নিয়ে সময়ে সময়ে নিজের মতামত দিচ্ছেন। তেমনই এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তান দলে গৃহদাহের খবর দিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তানের সাদা বলের কোচ গ্যারি করস্টেনের কণ্ঠেও একই কথা জানান।
এবার আকরাম আরেকটু গভীরে প্রোথিত সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। শুধু যে মাঠের ক্রিকেটে বাবর আজমদের পারফরম্যান্স ভালো নয় তাই না, মাঠের বাইরেও তো পাকিস্তান ক্রিকেটের টালমাটাল অবস্থা। এক বছরের মধ্যে তিন সভাপতি দেখেছে পাকিস্তান ক্রিকেট।
এই বিষয়টি যে পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নয়নে বড় অন্তরায়, তা সম্প্রতি এক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে উল্লেখ করেন আকরাম, ‘এক বছরে তিন সভাপতি বদলে গেল। রমিজ রাজা বরখাস্ত হয়েছেন। তিন মাসের জন্য এখানে এলেন নাজাম শেঠি। শেঠি চলে গেলেন এবং জাকা আশরাফ এলেন। চার বা পাঁচ মাস পর এলেন মহসিন নাকভি। আমার পরামর্শ তাঁরা নেবেন না। পাকিস্তান ক্রিকেট থেকে দূরে থাকতে পেরে আমি খুশি। কারণ, বোর্ডে রাজনীতি, সমালোচনা এসবই বেশি হয়।’
ভারতের মাটিতে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ভরাডুবির পর নেতৃত্ব ছেড়ে দেন বাবর। এরপর শাহিন শাহ আফ্রিদিকে নেতৃত্ব টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৪-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর অধিনায়কত্ব হারান শাহিন।
আবার সাদা বলের নেতৃত্বে আবার ফেরেন বাবর। বারবার বোর্ড সভাপতি বদলের মতো অধিনায়ক পরিবর্তনেও বড় সমস্যা দেখছেন আকরাম, ‘বাবর আজমকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানো হলো। শাহিনকে আনা হয়েছিল। সে (শাহিন) একটা সিরিজ হারল ও সভাপতিও বদলে গেল একই সময়ে। তারপর তিনি এসে অধিনায়ক বদলে ফেললেন। বিশ্ব ক্রিকেটে আমাদের নিয়ে হাসাহাসি হয়।’
উল্লেখ্য, চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। সাবেক ক্রিকেটার, সংবাদমাধ্যম এবং সমর্থকদের সমালোচনার তীক্ষ্ণবানে বিদ্ধ বাবররা কীভাবে ঘুরে দাঁড়ান সেটাই এখন দেখার বিষয়।