আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটবে এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগেই জানতেন। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে পিলখানা হত্যায় শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, আমরা জানি, সেদিন ঘটনার কিছু পূর্বে বেগম জিয়ার বাসা থেকে একটি কালো রঙের গাড়ি কোনো প্রটোকল না নিয়ে বেরিয়ে গেছে। এতে প্রমাণিত হয়ে তিনি জানতেন ঘটনা ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, মাস্টারমাইন্ডদের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছি আমরা। ঘটনার পেছনে যারা কুশীলব, কিছুটা তো আমরা জানি কারা ছিল।
মন্ত্রী বলেন, দুটি মামলা হয়েছে, একটি হত্যার ও একটি বিস্ফোরকের মামলা। বিচারের যে নিয়ম, সেই নিয়ম তো আমাদের পালন করতে হবে। সেটা না হলে আবার অন্য দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমি শুনেছি, বিচারের কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে।
তিনি বলেন, যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে এবং আমাদের পার্টি-আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও আমরা দাবি করি, আমরা আশা করি যে, অতি দ্রুততার সঙ্গে এই মামলার মীমাংসা হবে এবং যারা দোষী তাদের কঠোরতম শাস্তি হবে।
মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, েএই ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত সবার শাস্তি হবে এবং এই ধরনের ঘটনা যাতে আর কখনো বাংলাদেশে না ঘটতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আগামীতেও নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির এই দিনে সকাল ৯টা ২৭ মিনিটের দিকে বিডিআরের বার্ষিক দরবার চলাকালে হলে ঢুকে পড়েন একদল বিদ্রোহী সৈনিক। তাদের একজন তৎকালীন মহাপরিচালকের (শাকিল আহমেদ) বুকে বন্দুক তাক করেন। সূচনা হয় ইতিহাসের সেই নৃশংসতম ঘটনার।
তাদের গুলিতে একে একে লুটিয়ে পড়তে থাকেন সেনা কর্মকর্তারা। ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর এ বিদ্রোহের অবসান হয়। পিলখানা পরিণত হয় এক রক্তাক্ত প্রান্তরে। পরে পিলখানার ভেতরে আবিষ্কৃত হয় গণকবর। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় সেনা কর্মকর্তাদের লাশ। ৩৬ ঘণ্টার এ হত্যাযজ্ঞে ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, এক সৈনিক, দুই সেনা কর্মকর্তার স্ত্রী, ৯ বিজিবি সদস্য ও পাঁচ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হন।
বহুল আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় (পিলখানা হত্যা মামলা) ১৩৯ জনের ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১৫ বছর অতিবাহিত হলেও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি কোনো মামলার। দুটি মামলার মধ্যে হত্যা মামলার বিচার আপিল বিভাগে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ।
বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অপর মামলাটি এখনো বিচারিক (নিম্ন) আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের গণ্ডি পার হয়নি।