কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি দুই দিনের সফরে সোমবার (২২ এপ্রিল) ঢাকা আসছেন। গত জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্যের কোনও দেশ থেকে এটি প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর। আমিরের ঢাকা সফরের সময়ে ১১টি দলিল সই হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সফর উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ১১টি দলিলের মধ্যে ছয়টি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক। চুক্তিগুলো হচ্ছে দ্বৈতকর পরিহার, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা, সাগরপথে পরিবহন, বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি ও যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি।
সমঝোতা স্মারকের মধ্যে রয়েছে, শ্রমশক্তি বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, বন্দর পরিচালনা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া সহযোগিতা এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ সহযোগিতা।
সফরের তাৎপর্য বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাতার মধ্যপ্রাচ্যে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রমবাজার, সেখানে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন।
এছাড়া বিপুল পরিমাণ সার্বভৌম তহবিল রয়েছে কাতারের এবং বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় বিনিয়োগের উৎস হতে পারে ওই তহবিল। একইসঙ্গে বাংলাদেশের জন্য জ্বালানি আমদানির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎস কাতার, মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর, বন্ধুত্বপূর্ণ ও বহুমুখী। কাতার বঙ্গবন্ধুর সরকারকালীন সময়ে (১৯৭৪ সালে) বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী অন্যতম মুসলিম রাষ্ট্র।’
সাম্প্রতিককালে কাতারের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক, যোগাযোগ ও আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পরিধি সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, জ্বালানি, বিমান চলাচল, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ইত্যাদি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সংঘাত এবং গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। মন্ত্রী বলেন, কাতার এ বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। স্বাভাবিকভাবে এসব আলোচনা আসতেই পারে।
আমিরের নামে রাস্তা
কাতারের আমিরের নামে ঢাকায় একটি সড়কের নামকরণ হবে বলে জানান মন্ত্রী। ঢাকা উত্তরের মিরপুরের কালসি এলাকায় বালুর মাঠের নির্মিতব্য পার্ক এবং মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালসি উড়াল সেতু পর্যন্ত সড়কটি আমিরের নামে করা হবে।