স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, সরকার করোনার মতো ডেঙ্গু চিকিৎসাও বিনামূল্যে দিচ্ছে। ডেঙ্গু চিকিৎসায় খরচ দুই ধরনের হয়। যাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা বা প্লাটিলেট নিতে হচ্ছে তাদের চিকিৎসা ব্যয় এবং যাদের লাগছে না তাদের খরচ ভিন্ন। এর চিকিৎসায় সরকারিভাবে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। রোগীপ্রতি সরকারের গড়ে ব্যয় ৫০ হাজার টাকা।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর শেরাটন হোটেলে ডেঙ্গু মোকাবিলায় করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। চলতি মৌসুমে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ডেঙ্গু চিকিৎসায় ব্যয় করেছে সরকার।
ডেঙ্গুতে আক্রান্তদের অধিকাংশই ঢাকার বাসিন্দা জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের ডেঙ্গু রোগীদের অর্ধেক ঢাকা সিটি করপোরেশনের, বাকিগুলো সারাদেশের। এটি যদি নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাহলে অর্ধেক রোগী কমে আসবে।
আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারীর সংখ্যা কম হলেও মৃত্যুতে নারী হার বেশি। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে মোট ভর্তি রোগীর ৬০-৬৫ শতাংশ হচ্ছে পুরুষ এবং ৩৫ শতাংশ নারী। কিন্তু মোট মৃতের মধ্যে নারীদের হার ৬৫ শতাংশ। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে নারীরা চিকিৎসা নিতে দেরি করছেন। তারা অসুস্থ হলে পরিবারসহ তাদের কাছের মানুষদের নজর রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে চিকিৎসা দেয়া। আমরা সেটি করে যাচ্ছি। রোগীদের স্যালাইনসহ সেবার যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছি আমরা। সিটি করপোরেশনসহ সবার সঙ্গে আমরা তথ্য শেয়ার করছি। এডিস প্রতিরোধে তাদের সহযোগিতা করছি। পৃথিবীর অন্যসব দেশ থেকে তথ্য নেয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু কারও একার পক্ষে এই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। একে অপরকে দোষারোপ না করে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আর আমাদের সবার মনে রাখতে হবে, আমরা মানুষের জীবন নিয়ে ডিল করছি।
তিনি বলেন, দেশের সরকারি হাসপাতালে ৭০ শতাংশ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। আর বাকি ৩০ শতাংশ রোগী বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন। সাধারণত দুই ধরনের ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়। অনেকের প্লাটিলেট ও আইসিইউ প্রয়োজন হয়। আবার অনেকে শুধু ওষুধেই সুস্থ হয়।
সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ১২ হাজার ১৮৪ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১ লাখ ৩ হাজার ৪১১ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৮ হাজার ২৩৬। এছাড়া এবার এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৫৩৭ জন।