জেলেনস্কির রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযানে সাফল্যের আশা

রাশিয়ার হাত থেকে অধিকৃত এলাকা ছিনিয়ে নিতে গত প্রায় তিন মাস ধরে ইউক্রেন সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে৷ কিন্তু উল্লেখযোগ্য সাফল্যের অভাবে দেশে-বিদেশে সমালোচনা বাড়ছে৷ সম্প্রতি বিচ্ছিন্ন কিছু অঞ্চলে সাফল্য পেলেও দেশের দক্ষিণ ও পূর্ব অংশে রুশ বাহিনী জমি আঁকড়ে বসে আছে৷ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি এই সামরিক অভিযানে কিছু সাফল্যের দাবি করেছেন৷

দৈনিক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে দক্ষিণে তাভ্রিয়া সেক্টরে বেশ কিছু এলাকার উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে৷ তার মতে, বাখমুত সেক্টরেও কিছু সাফল্য পাওয়া গেছে৷ তাছাড়া পূর্বাঞ্চলে জমি পুনর্দখল করতে না পারলেও রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে আরো অগ্রসর হতে দিচ্ছে না ইউক্রেনীয় সৈন্যরা৷

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকেও বিভিন্ন এলাকায় কৌশলগত সাফল্যের দাবি করা হচ্ছে৷ সরকার ও সেনাবাহিনী বার বার বলছে, যে দখলদারি রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে পালটা সামরিক অভিযানে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেতে আরো সময়ের প্রয়োজন৷ পশ্চিমা বিশ্বের কিছু সংবাদ মাধ্যমে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর ভুলভ্রান্তির সমালোচনাও উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে৷

দ্য ইকোনমিস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, সেনাবাহিনীর মনোবলের জন্য একটানা সাফল্য অত্যন্ত জরুরি৷ বর্তমানে সামরিক অভিযানে যথেষ্ট গতি এসেছে বলে তিনি দাবি করেন৷ অদূর ভবিষ্যতে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের পূর্বাভাস দিয়েছেন জেলেনস্কি৷ বিশেষ করে দেশের দক্ষিণে রুশ হানাদার বাহিনীকে বিতাড়িত করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন তিনি৷

শুধু অধিকৃত এলাকা নয়, খোদ রাশিয়ার ভূখণ্ডেও ইউক্রেনের সামরিক তৎপরতার লক্ষণ বার বার দেখা দিচ্ছে, যদিও সে দেশ সরাসরি সে বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছে না৷ সোমবার ভোরে সীমান্তবর্তী বেলগোরোদ শহরের কাছে রাশিয়া দুটি ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে বলে দাবি করেছে৷ সেই ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায় নি৷ গত কয়েক মাসে রাজধানী মস্কো পর্যন্ত বার বার ড্রোন হামলা প্রতিহত করা হয়েছে বলে রাশিয়া দাবি করে আসছে৷ হামলার জন্য ইউক্রেনকে দাবি করলেও ড্রোনের উৎস অস্পষ্ট থেকে যাচ্ছে৷

ইউক্রেনে অধিকৃত এলাকার উপর নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ পাকাপাকি করতে রাশিয়া গত এক সপ্তাহ ধরে আঞ্চলিক ও পৌর নির্বাচনের আয়োজন করেছে৷ দেশের অন্যান্য কিছু প্রান্তের সঙ্গে ইউক্রেনের অধিকৃত এলাকায়ও রোববারের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের রাজনৈতিক শিবিরের জয়ের দাবি করা হয়েছে৷ বিরোধী দলগুলি এই নির্বাচনকে প্রহসন হিসেবে বর্ণনা করেছে৷ সেইসঙ্গে কারচুপির অভিযোগও উঠেছে৷ কাউন্সিল অফ ইউরোপের মতে, ইউক্রেনের স্বীকৃত ভূখণ্ডে রাশিয়ার এই নির্বাচনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক আইন ভাঙা হয়েছে৷ সূত্র: ডিডাব্লিউ, রয়টার্স, এএফপি