গুম-খুনের ‘মাস্টারমাইন্ড’, ফোনকলে আড়িপাতা, মানুষের ব্যক্তিগত আলাপ রেকর্ড ও ফাঁস করা সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তার স্ত্রী-সন্তান এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
হিসাব জব্দ করাদের ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সব লেনদেন বন্ধ থাকবে। আগামী ৩০ দিন এসব হিসাবে কোনো ধরনের লেনদেন করা যাবে না। প্রয়োজনে লেনদেন স্থগিত করার এ সময় বাড়ানো হবে।
লেনদেন স্থগিত করার এ নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে জিয়াউল আহসান ও তার স্ত্রী সন্তানের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দেওয়া হয়েছে।
বিএফআইইউয়ের নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, কোনো হিসাব স্থগিত করা হলে হিসাব সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী ইত্যাদি চিঠি দেওয়ার তারিখ থেকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের কাছে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হয়েছে।
জিয়াউল আহসান সেনবাহিনীর পাশাপাশি র্যাব, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সংস্থা, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারে (এনটিএমসি) দায়িত্ব পালন করেছেন। কর্মজীবনের গত এক দশকের বেশি সময় গুম, খুন ও ব্যক্তিগত ফোনকলে আড়িপাতাসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তিনি সমালোচিত হয়েছেন। তৎকালীন সরকারের আস্থাভাজন হওয়ায় ক্রমান্বয়ে পদোন্নতি পেয়ে মেজর থেকে মেজর জেনারেল হয়েছেন তিনি।
জিয়াউল আহসানের জন্ম ১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর, ঝালকাঠি জেলায়। ১৯৯১ সালের ২১ জুন তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে পদাতিক কর্মকর্তা হিসেবে কমিশন লাভ করেন। তিনি সেনাবাহিনীর একজন প্রশিক্ষিত কমান্ডো ও স্কাই ডাইভার।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার এক বছরের মাথায় ২০০৯ সালে মেজর থাকাকালে জিয়াউলকে র্যাব-২ এর ভাইস ক্যাপ্টেন করা হয়। লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে ওই বছরের ২৭ আগস্ট র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের (গোয়েন্দা শাখা) পরিচালকের দায়িত্ব পান তিনি।