বিজ ডেস্ক
বহুজাতিক সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লাফার্জকে ৭৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হবে, বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ ৭ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) অর্থায়নের অভিযোগে এই জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ব্রুকলিন শহরের একটি আদালত এই জরিমানা করেছে।
তবে প্রতিষ্ঠানটি আইএসকে অর্থায়ন বা সহায়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, সিরিয়ায় অবস্থিত তাদের কারখানার কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য তৃতীয় পক্ষকে কিছু অর্থ দেওয়া হয়েছিল। অর্থ দেওয়ার পেছনে জঙ্গীবাদকে সমর্থনের কোনো ইস্যু ছিল না।
ফ্রান্সভিত্তক কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ২০১৩ এবং ২০১৪ সালে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) প্রায় ৬০ লাখ ডলার দিয়েছিল। সিরিয়ায় ব্যবসা চালিয়ে যেতে তারা এই অর্থ দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে কোম্পানিটি অর্থ দেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। তবে তারা দাবি করেছে, জঙ্গীবাদকে সহায়তার উদ্দেশ্যে ওই অর্থ দেয়নি। সিরিয়ায় তাদের কারখানার কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা ওই অর্থ প্রদানে বাধ্য হয়েছিল।
লাফার্জ সুইজারল্যান্ডভিত্তিক হোলসিম গ্রুপের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান। আইএসকে সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের ভাষ্য, সিরিয়ায় লাফার্জের সিমেন্ট উৎপাদন চালিয়ে যেতে ইসলামিক স্টেটের নেতাদের অর্থ দিয়েছিলেন তাঁরা।
এর আগে ফ্রান্সের আদালতে লাফার্জের আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন, অর্থ দেওয়ার পেছনে জঙ্গি সংগঠনটিকে সহায়তার কোনো সংকল্প ছিল না প্রতিষ্ঠানটির।
গত শতকের মাঝামাঝি সময়ে ব্যবসা শুরু করে লাফার্জ। সিরিয়ায় যখন ইসলামিক স্টেটের তাণ্ডব চলছিল, তখন প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও পুরোদমে ব্যবসা চালিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। যদিও ঝুঁকির মুখে সে সময় দেশটি থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছিল অনেক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান।
জঙ্গিদের অর্থ দেওয়াসংক্রান্ত কিছু গোপন নথি ২০১৮ সালে প্রকাশ করে নিউইয়র্ক টাইমস। ফ্রান্সের আদালতের ওই নথিতে দেখা যায়, আইএসকে সরাসরি অর্থ দেয়নি লাফার্জ। এ কাজে তারা সহায়তা নিয়েছিল তৃতীয় পক্ষের। ব্যবসা চালিয়ে যেতে একইভাবে প্রতিষ্ঠানটি সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদার অঙ্গসংগঠনসহ সিরিয়ায় অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকেও অর্থ দিয়েছিল।
খবর বিবিসি, রয়টার্স ও সিএনবিসির।