চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সার্ভারের ধীরগতিতে প্রায়ই স্থবির হচ্ছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। গত এক সপ্তাহের সার্ভার জটিলতায় প্রতিদিন অন্তত ৪ কোটি টাকা পোর্ট ড্যামারেজ গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। এ অবস্থায় বিকল্প সার্ভার স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গত সপ্তাহের পুরোটা সময় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সার্ভারের ধীরগতির কারণে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে চরম স্থবিরতার সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা কিংবা সকালের দিকে সার্ভারের কিছু গতি থাকলেও পিক-আওয়ার হিসেবে চিহ্নিত দিনের বাকি সময় আমদানি বাণিজ্যের আইজিএম এবং রফতানি বাণিজ্যের ইজিএম দাখিল করতে ব্যর্থ হন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা। এ অবস্থায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ যেমন পণ্যের শুল্কায়ন করতে ব্যর্থ হয়, তেমনি বন্দর থেকে পণ্যের ডেলিভারিও কমে যায়। সূত্র সময় টিভি
বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান খায়রুল আলম সুজন বলেন, কোনো কারণে কোনো কাজ ব্যাহত হলে প্রতিটি আমদানি ও রফতানিকারকসহ এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার উপর তার প্রভাব পড়ে।
তবে কাস্টমের সার্ভার জটিলতায় সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়তে হয়েছে গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের। এসময় আমদানিকৃত কাঁচামাল যেমন তারা কারখানায় নিতে পারছিলেন না, তেমনি তৈরি পোশাক জাহাজিকরণ ও রফতানি আটকে যায়। প্রতিদিন অন্তত ৪ কোটি টাকা করে পোর্ট ড্যামারেজ গুনতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিজিএমইএ। ডিজিটালের পরিবর্তে ম্যানুয়েল সিস্টেম চালু করে বাণিজ্য সচল রাখতে কাস্টমস কমিশনারের কাছে চিঠিও দিয়েছেন তারা।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, বিকল্প কোনো সার্ভার ব্যাকআপ রাখা দরকার। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতির অনেকটা নির্ভর করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এই কাস্টমের ওপর।
আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের শুল্কায়নে ব্যবহৃত অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সফটওয়ারের আপডেট দিতে গিয়েই এ জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, নিম্নগতি হওয়ার জন্য কিছু প্রযুক্তিগত বিষয় থাকতেই পারে। অনেক সময় অনেক ব্যবহারকারী একসঙ্গে লগইন করলেও সেখানে ডাউন হতে পারে। আমাদের সার্ভার ধীরগতি হওয়ার একটা অভিযোগ ছিল। তবে দ্রুতই এটির সমাধান করা হয়েছে।
প্রতিবছর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে অন্তত দুই লাখ কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রফতানি হয়। আর চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ এ বাণিজ্য থেকে শুল্ক আদায় করে ৭০ হাজার কোটি টাকার বেশি। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় অ্যাসাইকুডা ওয়াল্ড সফটওয়ারের মাধ্যমে।