সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক লিটন দাস। নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল না থাকায় এদিন বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
এদিন মুস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে শুরু করলেন তিনি। তবে সুবিধা করতে পারলেন না বাঁহাতি এই পেসার। আফগানিস্তানের দুই ওপেনারকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেননি হাসান মাহমুদ-ইবাদত হোসেনরাও। তেমন কোন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে না হওয়ায় আফগানদের দারুণ শুরু এনে রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইব্রাহিম জাদরান। যদিও পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগে উইকেট পেতে পারতো বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের বলে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন ইব্রাহিম। খানিকটা দৌড়ে এসে ড্রাইভ দিলেও ক্যাচ লুফে নিতে পারেননি তাওহীদ হৃদয়।
পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পর রান তোলার গতি খানিকটা বাড়িয়ে দেয় আফগানিস্তান। যেখানে সফরকারীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন গুরবাজ। এদিকে দারুণ ব্যাটিংয়ে ৪৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ডানহাতি এই ওপেনার। ১৩তম ওভারে সাকিবের দ্বিতীয় বলে চার মারার পরের বলে ছক্কা মেরে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন গুরবাজ। তাদের দুজনের কল্যাণে আফগানরা দলের রান একশ ছুঁয়েছে ১৪.২ ওভারে।
এদিকে উইকেটের জন্য হাহাকার যেন বেড়েই চলেছে বাংলাদেশের। ব্রেক থ্রু পেতে বারবার বোলিং পরিবর্তন করছেন অধিনায়ক লিটন। কখনও মেহেদি হাসান মিরাজ, ইবাদত কিংবা হাসান মাহমুদকে দিয়ে চেষ্টা করেছেন তিনি। তবুও উইকেটের দেখা পাচ্ছে না বাংলাদেশ। দেখতে দেখতে আফগানিস্তানের দলীয় সংগ্রহ ১৫০ পার করেছে। আফগানিস্তানের ইতিহাসে ওপেনিংয়ে এতো বেশি রান আগে হয়নি। শুরু থেকে আগ্রাসী ভঙ্গিমায় খেলা গুরবাজ ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি তুলে নেন। সেঞ্চুরির আগমুহূর্তে অবশ্য বেশ ধীরে সুস্থে খেলেন তিনি। সেঞ্চুরি পেয়েছেন একশ বলে।
সেঞ্চুরির পর আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন গুরবাজ। প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন তিনি। ব্যক্তিগত ১৪৫ রানে থাকা অবস্থায় তাকে থামিয়েছেন সাকিব। ফেরার আগে ১২৫ বলে ১৩টি চার এবং আটটি ছক্কায় ১৪৫ রান তোলেন গুরবাজ। ৩৭তম ওভারে সাকিবের করা শর্ট বলটি স্কয়ার লেগে পাঠাতে চেয়েছিলেন গুরবাজ। কিন্তু ব্যাটে বলই লাগাতে পারেননি তিনি। লেগ স্টাম্প বরাবর বল লাগে গুরবাজের পেছনের পায়ে। আম্পায়ার তাৎক্ষণিকভাবে আউট দিয়ে দেন।
রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি গুরবাজ। আম্পায়ার্স কলে ফিরে যান তিনি। তার ফেরার মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ২৫৬ রানের রেকর্ড ওপেনিং জুটি ভাঙে। তারপর ব্যাটিংয়ে আসেন রহমত শাহ। কিন্তু পরের ওভারের প্রথম বলেই তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান ইবাদত। ইবাদতের করা শর্ট বলটি ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেন রহমত। সেখানে অসাধারণ একটি ক্যাচ লুফে নেন মুস্তাফিজুর রহমান। সাত বলের বেশি টিকতে পারেননি অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদিও (২)। তার অফ স্টাম্প ভেঙে দেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ইনিংসের ৪৪তম ওভারে নাজিবউল্লাহ জাদরানকেও ফেরান মিরাজ। লং অনে ক্যাচটি লুফে নেন লিটন। ইনিংসের ৪৬তম ওভারে সেঞ্চুরি তুলে নেন পুরো ইনিংসের শুরু থেকে ধৈর্যশীল হয়ে ব্যাট চালানো ইব্রাহিম। ১১৮ বলে সেঞ্চুরির ছোঁয়া পান তিনি। সেঞ্চুরির পর তাকে ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। মিড উইকেটে ক্যাচটি লুফে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
এদিকে অবসর সংক্রান্ত ইস্যুতে বাংলাদেশের একাদশে নেই নিয়মিত অধিনায়ক তামিম ইকবাল। আপাতত দেড় মাসের বিশ্রামে তিনি। তার জায়গায় খেলছেন নাইম শেখ। দুই বছর পর বাংলাদেশের ওয়ানডে একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন নাইম। এই ম্যাচে অবশ্য খেলা হচ্ছে না তাসকিন আহমেদের। তার জায়গায় একাদশে এসেছেন ইবাদত হোসেন।