

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ২৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে সাংবাদিকও রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৯০ ফিলিস্তিনি নিহত হন। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজার মধ্যাঞ্চলীয় নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। হামলার পর প্রাথমিকভাবে ১৫ জনের নিহত হওয়ার কথা জানানো হলেও পরে তা বেড়ে ২৫ জনে পৌঁছায়।
হামলায় নিহতদের মধ্যে সাংবাদিকও রয়েছেন। আল জাজিরা ধারণ করা এক ভিডিওতে, মারাত্মক এই হামলার পর বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী এবং অসংখ্য বেসামরিক উদ্ধারকারীকে সরু ও অন্ধকার গলির মধ্য দিয়ে দৌড়াতে দেখা গেছে। অন্যদের শারীরিকভাবে আহত ব্যক্তিদের বহন করতে বা অস্থায়ী স্ট্রেচার ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
এছাড়া পৃথক ভিডিওতে সর্বশেষ ইসরায়েলি হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া আরও বেশি লোককে খুঁজে বের করার জন্য বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মী এবং বাসিন্দাদের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে অব্যাহতভাবে তল্লাশি করতে দেখা যায়।
হামলাস্থলে আল জাজিরার একটি টিম রয়েছে এবং তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলি এই হামলায় মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১৫ থেকে ২৫ জনে পৌঁছেছে। ফিলিস্তিনি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে সাংবাদিক হানিন আলি আল-কাশতানও রয়েছেন।
ওয়াফা আরও জানিয়েছে, আল কাশতানকে তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে হত্যা করা হয়েছে।
গাজার এই শরণার্থী শিবিরটি সংঘাত শুরুর পর থেকে গত ৭৩ দিনে একাধিকবার ইসরায়েলি বোমা হামলার শিকার হয়েছে। যার ফলে বহু হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
অন্যদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলায় অন্তত ৯০ জন নিহত ও আরও ১০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, রোববার জাবালিয়া শহরের আল-বারশ এবং আলওয়ান পরিবারের আবাসিক ভবনে ইসরায়েল হামলা চালায় বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে এবং কয়েক ডজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন বলে ওয়াফা তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে। স্থানীয়রা এখনও আহতদের সন্ধান করছেন এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও মৃতদেহ রয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
শিশুসহ আহতদের মধ্যে অনেককে কাছাকাছি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এছাড়া ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর মুখপাত্র দাউদ শেহাবের ছেলে নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বলে গ্রুপের একজন কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন।
তিনি ফোনে বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি ধ্বংসস্তূপের নিচে মৃত মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি কিন্তু ইসরায়েলি গোলাবর্ষণের তীব্রতার কারণে ধ্বংসস্তুপ অপসারণ এবং তাদের উদ্ধারের কোনও উপায় নেই।’
এছাড়া মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ-তে হামলায় কমপক্ষে ১২ ফিলিস্তিনি নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহতে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে চারজন নিহত হয়েছেন।