ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন। রোববার (২০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া শহরে ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৭৩ জন নিহত হয়েছেন বলে গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। শনিবার গভীর রাতে হওয়া এই বোমা হামলার পর আরও বহু মানুষ আহত হয়েছেন এবং অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইসরায়েল বলেছে, তারা হামলায় হতাহতের রিপোর্ট পরীক্ষা করছে। কিন্তু একইসঙ্গে তারা হামাস কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত পরিসংখ্যানকে “অতিরঞ্জিত” বলে আখ্যায়িত করে বলেছে, এ বিষয়ে তার সেনাবাহিনীর কাছে থাকা তথ্যের সাথে (হামাসের তথ্য) মেলে না।
শহরের ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালে ইসরায়েলি সৈন্যদের “ভারী বন্দুকযুদ্ধের” খবরের কয়েক ঘণ্টা পর সর্বশেষ এই হামলার ঘটনা ঘটল।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অঞ্চলে যোগাযোগ ও ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে বেইত লাহিয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস বলেছে, “জনাকীর্ণ” আবাসিক এলাকায় বোমা হামলা চালানো হয়েছে এবং এতে ৭৩ জন নিহত হয়েছেন। গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সিও ইসরায়েলি হামলায় নিহতের এই একই সংখ্যা জানিয়েছে।
তবে বিবিসি স্বাধীনভাবে এই পরিসংখ্যানটি যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি। ফিলিস্তিনি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, হামলায় পুরো একটি আবাসিক কমপ্লেক্স ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) বিবিসিকে বলেছে, তারা “হামাসের সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে” হামলা করেছে এবং “বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি এড়াতে সম্ভাব্য সবকিছু করছে”। তারা আরও বলেছে, হামাস অফিস কর্তৃক প্রদত্ত হতাহতের ঘটনা “অতিরিক্ত” এবং এই জাতীয় সূত্রগুলো “আগের ঘটনাগুলোতে অত্যন্ত অবিশ্বস্ত বলে প্রমাণিত হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
নিহত হয়েছেন ৪২ হাজারেরও বেশি মানুষ। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় এক লাখ মানুষ।
অবশ্য ইসরায়েল চলতি অক্টোবর মাসের শুরুতে উত্তর গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান শুরু করে। দখলদার বাহিনী বলেছে, তারা এই অঞ্চলে হামাসকে পুনরায় সংগঠিত হতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বিশেষ করে, ইসরায়েলি বাহিনী ঘনবসতিপূর্ণ জাবালিয়া এলাকা ঘেরাও করেছে এবং বোমাবর্ষণ করে চলেছে। যার মধ্যে একটি শহুরে শরণার্থী শিবির রয়েছে – যেখানে গত শুক্রবার গভীর রাতে হওয়া ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।