দীর্ঘদিনের স্থবিরতা কাটিয়ে গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রচেষ্টায় আবারও আলোচনায় বসার ইঙ্গিত দিয়েছে হামাস ও ইসরাইল। যুদ্ধ বন্ধে আগের অনেকগুলো চেষ্টা ব্যর্থ হলেও এখন ইসরাইল ও হামাস উভয় পক্ষ গাজা যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ফের আলোচনায় আগ্রহের কথা জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ইসরাইল জানিয়েছে, তাদের গোয়েন্দাপ্রধান গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় যোগ দেবেন। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির চুক্তি হলে লড়াই বন্ধের অঙ্গীকার করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস।
গত সপ্তাহে হামাসের শীর্ষ নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ইসরাইলি হামলায় নিহত হন। এরপর যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ওই হত্যাকাণ্ড গাজা যুদ্ধ সমাপ্তির একটি পথ হিসেবে কাজ করতে পারে।
হামাসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, তাদের দোহাভিত্তিক একটি প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার কায়রোতে মিশরীয় কর্মকর্তাদের সাথে গাজা যুদ্ধবিরতি সম্পর্কিত ‘ধারণা ও প্রস্তাবনা’ নিয়ে আলোচনা করেছে।
তিনি আরও বলেন, হামাস যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য প্রস্তুত, তবে ইসরাইলকে অবশ্যই একটি যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। গাজা উপত্যকা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে, বাস্তুচ্যুত লোকদের ফিরে যাওয়ার অনুমতি দিতে হবে, বন্দী বিনিময় চুক্তিতে সম্মত হবে এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিতে হবে।
হামাস কর্মকর্তা আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য মিশরের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কায়রোতে বৈঠকটি হয়।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজায় থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে মিশরের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
কায়রো বৈঠকের পর নেতানিয়াহু ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ প্রধানকে আগামী রোববার প্রধান যুদ্ধ বন্ধের প্রধান মধ্যস্থতাকারী কাতারে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এমন নির্দেশনার উদ্দেশ্য আলোচ্যসূচিতে থাকা একাধিক উদ্যোগকে সামনে এগিয়ে নেয়া।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলায় চালিয়েছিল হামাস। ওই হামলায় ১ হাজার ২০৬ জন নিহত হন। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় প্রায় ২৫০ জনকে। জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় নির্বিচারে হামলা শুরু করে ইসরাইল। তাদের হামলায় এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৮৪৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ২০ লাখ ফিলিস্তিনি।