গাজা উপত্যকার উত্তরাঞ্চলে জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে বহু বাড়ি ও ভবন। গত ১১ অক্টোবরের ছবি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এর মধ্যে সর্বশেষ এক হামলায় ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
এদিকে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় গাজায় সামগ্রিকভাবে নিহতের সংখ্যা ২৮০০ ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আরেকটি বিমান হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৭১ জন নিহত হয়েছেন। হামলার পর প্রাথমিকভাবে প্রথমে ২৫ জনের ও পরে ৫৪ জনের নিহত হওয়ার কথা বলা হলেও পরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১ জনে পৌঁছেছে।
গাজার একটি মেডিকেল সূত্র আল জাজিরা আরবিকে জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের দক্ষিণ অংশের একটি বাড়িতে ইসরায়েল বিমান হামলা চালায়। আর সেখানেই হতাহতের এই ঘটনা ঘটে।
অবশ্য দক্ষিণ গাজার কোন অংশে ইসরায়েলি এই হামলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। এর আগে, গাজার খান ইউনিস এবং রাফাহ এলাকায় লাগাতার বোমা হামলার খবর পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে আল জাজিরা।
ওই মেডিকেল সূত্র আরও জানিয়েছে, রাফাহ এবং খান ইউনিসের বাড়িগুলোকে লক্ষ্য করে বোমা হামলায় আরও কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন।
এছাড়া পৃথক এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা রাতের আঁধারে গাজা উপত্যকায় হামাসকে লক্ষ্য করে ২০০ টিরও বেশি হামলা চালিয়েছে।
এদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলেও ইসরায়েলের ভারী গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া গেছে। আল জাজিরা বলছে, উত্তর গাজা উপত্যকার কিছু এলাকায় ইসরায়েলের ভারী গোলাবর্ষণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে হতাহতের বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
এছাড়া সোমবার রাত এবং মঙ্গলবার ভোরের দিকে ইসরায়েল যেসব বোমা হামলা চালিয়েছে তার বেশিরভাগই দক্ষিণ গাজাকে কেন্দ্র চালানো হয়।
মূলত মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত সপ্তাহে ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।
হামাসের এই হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের সংখ্যা ১৪০০ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্যও রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার ইসরায়েলি। এছাড়া আরও বহু মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।
পরে হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক। গাজায় অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই গত শনিবার ট্যাংকগুলো গাজার কাছে নিয়ে আসা শুরু হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে— যে কোনও সময় গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।
এছাড়া হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি বার্তাসংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৮০০ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে বিপুল সংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১১ হাজার ফিলিস্তিনি।