নভেম্বর ৮, ২০২৪

হামাসের গত ৭ অক্টোবরের হামলার সময় ইসরায়েল থেকে আটক করে গাজায় নিয়ে আসা আরও দুই মহিলাকে সোমবার মুক্তি দিয়েছে। তাদের বয়স্ক স্বামীরা এখনও ২শ’ জনেরও বেশি জিম্মির মধ্যে বন্দী রয়েছে।

ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা বলেছে, ইয়োচেভেদ লিফশিটজ এবং নুরিট কুপার নামে দুই বয়স্ক মহিলাকে কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতার পরে ‘আবশ্যক মানবিক’ কারণে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় দুই নারীর পরিচয় নিশ্চিত করে বলেছে, তারা যথাক্রমে ৮৫ এবং ৭৯ বছর বয়সী ইসরায়েলি নাগরিক এবং নিরওজ কিবুতজের বাসিন্দা।

এতে বলা হয়, হামাসের হাতে বন্দি থাকা ২শ’ জনেরও বেশি জিম্মির মধ্যে তাদের স্বামীরা বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। তাদের দু’জনেই বয়স ৮০ বছরের বেশী। এদের নিয়ে তিন দিনে চার নারী মুক্তি পেয়েছেন।

ইসরায়েলি মিডিয়া জানায়, গাজা ও মিশরের মধ্যবর্তী রাফাহ সীমান্ত ক্রসিংয়ে এই দুই নারীকে নিয়ে যাওয়া হয়।

ইসরায়েলি হেলিকপ্টার মুক্তি পাওয়া দুই জিম্মিকে তেল আবিবের একটি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায়। ইসরায়েলি সরকার বলেছে, সেখানে তাদের পরিবার তাদের জন্য অপেক্ষা করছিলো।

ঘটনাস্থলে একজন এএফপি’র সাংবাদিক জানিয়েছেন, একজনকে স্ট্রেচারে এবং অন্যজনকে হুইল চেয়ারে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

লিফশিটজ তার অপহরণের বিষয়ে বলেছেন, ‘আমি জানি না আমাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ ইসরায়েলি নিউজ সাইট ইয়েনেট এ কথা জানায়।

লিফশিটজ বলেন, ‘তারা আমাকে পাশের একটি মোটরসাইকেলে লোড করেছিল যাতে আমি পড়ে না যাই, একজন সশস্ত্র সদস্য আমাকে সামনে থেকে এবং অন্যজন পিছন থেকে ধরে রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘তারা সীমান্তের বেড়া পেরিয়ে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছিল এবং প্রথমে তারা আমাকে আবেসান শহরে আটকে রেখেছিল।’  ‘এর পর, আমি জানি না আমাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

রেড ক্রসের ইন্টারন্যাশনাল কমিটি বলেছে, তারা জিম্মিদের মুক্তির ব্যাপারে কাজ করেছে এবং গাজা থেকে নারীদের পরিবহনে সহায়তা করেছে।

সোমবার দিনের শেষে এক্স এ (সাবেক টুইটারে) রেড ক্রসের ইন্টারন্যাশনাল কমিটি লিখেছে, ‘আমরা আরও ২ জিম্মিকে মুক্তির সুবিধা দিয়েছি। আজ সন্ধ্যায় তাদের গাজা থেকে তাদের সরিয়ে নিয়েছি।

রেড ক্রস বলেছে, ‘একটি নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হিসাবে আমাদের ভূমিকা এই কাজটিকে সম্ভব করে তোলে এবং আমরা ভবিষ্যতের মুক্তির সুবিধা দিতে প্রস্তুত।’

আমেরিকান মা ও মেয়ে জুডিথ এবং নাটালি রানানকে শুক্রবার মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবং মানবিক কারণে কাতার ও মিশরের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেছে হামাস।

হামাসের যোদ্ধারা সীমান্ত পেরিয়ে দক্ষিণ ইসরায়েলের কিবুতজ সম্প্রদায়, শহর ও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে আটক জিম্মিদের সংখ্যা সোমবার বাড়িয়ে ২২২ জন নিশ্চিত করেছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলছেন, দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ এই হামলায় ইসরায়েলে ১৪শ’ জন নিহত হয়েছে।

গাজার হামাস-চালিত স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়ে ৫,০০০ লোক হত্যা করেছে। একটি বিস্ফোরক বোমা হামলার সাথে পাল্টা আঘাত করেছে যা এখন ৫,০০০ এরও বেশি লোককে হত্যা করেছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান হামলায় ফিলিস্তিনি মৃতের সংখ্যা আন্তর্জাতিক শঙ্কা তৈরি করেছে। সূত্র বাসস।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...