নভেম্বর ২৩, ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কৃষির উন্নয়নে কাজ করবে সরকার। কৃষক যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের দ্যাম দাম পান তা নিশ্চিতে কাজ করবে সরকার। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী যে আন্দোলন হয়েছে তার অংশীদার আমিও। আমি চাই সমাজ থেকে বৈষম্য দূর হোক। এ আন্দোলনে আপনারাও অংশ নিন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে দোয়া ও সহযোগিতা চাইতে এসেছি। সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলব। এখনই সব দাবি পূরণ করার জন্য জোর করা, প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ব্যক্তিবিশেষকে হুমকির মধ্যে ফেলা, মামলা গ্রহণে চাপ সৃষ্টি করা, বিচারের জন্য গ্রেফতার ব্যক্তিকে আদালতে হামলা করে আগেই এক ধরনের বিচার করে ফেলার যে প্রবণতা তা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের গৌরব ও সম্ভাবনা এসবের কাছে ম্লান হয়ে যাবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টা ব্যাহত হবে। ড. ইউনূস বলেন, রাতারাতি এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ কঠিন। নড়বড়ে একটা কাঠামোতে দাঁড়িয়ে আমাদেরকে দেশ পুনর্গঠনের কাজে হাত দিতে হয়েছে। আমরা এখান থেকেই বাংলাদেশকে এমনভাবে গড়তে চাই যেন এ দেশে জনগণই সত্যিকার অর্থে সকল ক্ষমতার উৎস হয়। বিশ্ব দরবারে একটি মানবিক ও কল্যাণকর রাষ্ট্র হিসেবে সমাদৃত হয়।

তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্ম, শিক্ষার্থী ও জনতার আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাতে রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে আমাদের সফল হতেই হবে। এর আর কোনো বিকল্প নেই।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রবাসীরা যেভাবে সহায়তা করেছেন সেটি কৃতজ্ঞতা ভরে স্বরণ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, প্রবাসী শ্রমিকরা যেভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে, মুক্তিকামী জনগণ তা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে।

প্রবাসীদের যথাযোগ্য মর্যাদা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীদের প্রতি সকল পর্যায়ে সম্মানজনক আচরণ নিশ্চিত করা হবে। দেশে যাওয়া-আসা নিয়ে সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা হবে।

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, একটা বিষয়ে সবাই জানতে আগ্রহী, কখন আমাদের সরকার বিদায় নেবে। এটার জবাব আপনাদের হাতে, কখন আপনারা আমাদের বিদায় দেবেন। আমরা কেউ দেশ শাসনের মানুষ নই। আমাদের নিজ নিজ পেশায় আমরা আনন্দ পাই। আমাদের উপদেষ্টামণ্ডলীও এই লক্ষ্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাই মিলে একটা টিম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। দেশের আপামর জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছে। আমরা ক্রমাগতভাবে সবাইকে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে যাব যাতে হঠাৎ করে এই প্রশ্ন উত্থাপিত না হয়- আমরা কখন যাব। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাব।

তিনি আরও বলেন, আমরা সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশনকেও সংস্কার করব। কমিশনকে যে কোনো সময় আদর্শ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রাখব।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...