বলিউড তারকা সিদ্ধার্থ মালহোত্রা ও কিয়ারা আদভানির বিয়ে হলো গত ৭ ফেব্রুয়ারি। জয়সালমেরের সূর্যগড় প্রাসাদে তারকা জুটির বিয়ের সাক্ষী ছিলেন মূলত তাদের পরিবারের সদস্যরাই। নবদম্পতির ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। তাদের সুখী দাম্পত্য জীবনের কামনাতেও ভরে গেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টগুলো। কিন্তু কিয়ারার সঙ্গে বিয়ে নাও হতে পারত সিদ্ধার্থের! অভিনেতার দীর্ঘ প্রেমিকাদের তালিকার হিসাব অন্তত তেমনটাই বলছে।
বিয়ের আগে হাফ ডজন নারীর সঙ্গে প্রেম করেছেন সিদ্ধার্থ। বলিপাড়ায় সিদ্ধার্থ পরিচিত বেশ চুপচাপ ও লাজুক হিসাবেই। পার্টিতেও তাকে সবসময় দেখা যায় না।
ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সিদ্ধার্থ সবসময়ই খুব চাপা। অতীতে প্রেম নিয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করলে তা সহাস্যে এড়িয়ে যেতেই দেখা গেছে। সেই সিদ্ধার্থই নাকি বিয়ের আগে ছয়টি প্রেম করেছেন!
সিদ্ধার্থের প্রেমিকাদের সবাই ডাকসাইটে সুন্দরীর তালিকায় রয়েছেন। এই তালিকায় প্রথমেই যার নাম আসে, তিনি রণবীর কাপুরের স্ত্রী আলিয়া ভাট্ট। সিদ্ধার্থ ও আলিয়া দুজনেই করণ জোহরের ‘স্টুডেন্ট অফ দ্য ইয়ার’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন। ছবি মুক্তির পরই বলিউডে গুঞ্জন ওঠে, আলিয়ার প্রেমে নাকি হাবুডুবু খাচ্ছেন সিদ্ধার্থ। মহেশ ভাট্ট-কন্যাও প্রেমে মজেছেন বলে শোনা যায়।
এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় একসঙ্গে দেখাও যেতে শুরু করে আলিয়া-সিদ্ধার্থকে। প্রকাশ্যে একে অপরের সঙ্গে প্রেম করার কথা গুজব বলে উড়িয়ে দিলেও দুজনেই নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে এ কথা স্বীকার করেছিলেন। তবে তাদের প্রেমের রসায়ন জমেনি। ২০১৭ সালে ছেদ পড়ে তাদের সম্পর্কে।
আলিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে সিদ্ধার্থ একবার বলেছিলেন, আমি মনে করি না যে তিক্ততার কারণে এই বিচ্ছেদ হয়েছে। এ রকমটা প্রায়ই ঘটে। এটা আর পাচটা সম্পর্কের মতোই ছিল। তবে তারা এখনো একে অপরের খুব ভাল বন্ধু বলে প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন দু’জনই।
আলিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর কয়েক মাস দক্ষিণ আফ্রিকার এক সুন্দরীর প্রেমে পড়েন সিদ্ধার্থ। মনে করা হয় সিদ্ধার্থের ওই রহস্যময়ী প্রেমিকার নাম নিকোল মেয়ার। পেশায় মডেস নিকোলের সঙ্গে নাকি মডেলিং সূত্রেই আলাপ হয় তার। তাদের সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি।
নিকোলের পর সিদ্ধার্থের মনে নাকি দোলা দিয়েছিলেন বলি অভিনেত্রী জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ। জ্যাকলিনের সঙ্গে ‘আ জেন্টলম্যান’ ও ‘ব্রাদার্স’ ছবিতে এক সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ‘আ জেন্টলম্যান’ ছবির সময় থেকেই নাকি সিদ্ধার্থ-জ্যাকলিনের প্রেমপর্ব শুরু হয়। বছর দেড়েক প্রেম করার পর সিদ্ধার্থের সেই প্রেমেও দাঁড়ি পড়ে যায়।
সিদ্ধার্থ বা জ্যাকলিন, কেউই প্রকাশ্যে কখনো সম্পর্কে থাকার কথা স্বীকার করেননি। কিন্তু জ্যাকলিন প্রসঙ্গে সিদ্ধার্থকে জিজ্ঞাসা করা হলে এক বার তিনি বলেছিলেন, জ্যাকলিন অসাধারণ একজন মানুষ। আমি ওর সঙ্গে আড্ডা দিয়ে খুব মজা পাই। জ্যাকি ও আমার মধ্যে একটি বিশেষ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে সিনেমার শুটিং চলাকালীন। কিন্তু আমরা কখনোই সম্পর্কে ছিলাম না। যদিও আমাদের মধ্যে অনেক মিল আছে।
বলিউড ‘ডিভা’ ক্যাটরিনা কাইফের সঙ্গেও নাকি মনের মেলবন্ধন হয়েছে সিদ্ধার্থের। ‘বার বার দেখো’ ছবির শুটিং করার সময়ই নাকি তাদের প্রেমে পাক ধরতে শুরু করে। জোরালো হয় সিদ্ধার্থ-ক্যাটরিনার সম্পর্ক। কিন্তু সে সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি। রণবীরের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরই নাকি সিদ্ধার্থের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন ক্যাটরিনা। তবে সে সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি।
সিদ্ধার্থের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল তারা সুতারিয়ারও। ‘মারজাওয়া’ ছবির শুটিং চলাকালীন নাকি একে অপরের নিকটে আসেন সিদ্ধার্থ-তারা। তারপর থেকে এই জুটিকে বহু বার একসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল। তবে প্রেম বৈতরণী একসঙ্গে পার করা হয়নি তারা-সিদ্ধার্থের। কয়েক মাস সম্পর্কে থাকার পরই তাদের নাকি বিচ্ছেদ হয়ে যায়। সিদ্ধার্থের পর অভিনেতা আদর জৈনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান তারা সুতারিয়া।
সিদ্ধার্থের প্রেমিকার তালিকায় শেষ সংযোজন কিয়ারা। সেই প্রেমও হয় এক ছবিতে অভিনয় করতে গিয়েই। ‘শেরশাহ’ ছবির শুটিংয়ের সময় একে অপরের প্রতি ভাললাগা তৈরি হয় সিদ্ধার্থ-কিয়ারার। সেখান থেকে ভালবাসা ও শেষে বিয়ে।
কিয়ারা প্রকাশ্যেই বিভিন্ন উত্তরে ও অভিব্যক্তিতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে সিদ্ধার্থ তার মনে দোলা দিয়েছেন। কিয়ারাও যে সিদ্ধার্থের প্রেমিকাদের তালিকায় সব থেকে আলাদা ছিলেন তা বোঝা গেল তাদের সম্পর্কের পরিণতি দেখে।
সূত্র : আনন্দবাজার