দেশের পুঁজিবাজারের স্বল্প মূলধনী কোম্পানিগুলোর মার্কেট এসএমই প্লাটফর্মের বৈষম্য দূরীকরণের দাবি তুলেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এ দাবির প্রেক্ষিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) চিঠি দিয়েছে তারা।
আজ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিএসইসি চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি চিঠি গ্রহণ করেছে কমিশন।
এতে বলা হয়েছে, আমরা এসএমই মার্কেটের বিনিয়োগকারী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শেয়ারে বিনিয়োগ করে থাকি। আমরা আমাদের পরিচিত অনেক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে কথা বলে এসএমই প্লাটফর্মের বিষয়ে কিছু বৈষম্যর লক্ষ্য করছি। এই বৈষম্য দূরীকরণে এসএমই প্লাটফর্মের শেয়ার সম্পর্কে কিছু দাবি আপনার নিকট পেশ করছি।
বিনিয়োগকারীদের লিখিত দাবিগুলো মধ্যে প্রথম দাবি এসএমই মার্কেটের সার্কিট ব্রেকার মূল মার্কেটের সার্কিট ব্রেকারের মতো করা। তাদের দাবি এটা না হলে এসএমই প্লাটফর্মের শেয়ার বৈষম্যের শিকার হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, সব ধরনের বিনিয়োগকারীকে এসএমই মার্কেটের শেয়ার কেনার সুযোগ দিতে হবে। ৩০ লক্ষ টাকা না থাকলে বা কোয়াটার শেষে কোয়ালিফাইড না হলে এসএমই কেনা যাবে না এই বাধ্যবাধকতা তুলে দিতে হবে।
এছাড়া তারা দাবি করেন, যে সকল কোম্পানি নির্দিষ্ট বা নির্ধারিত সময়ের পরেও ডিভিডেন্ট বিতরণ করেনি তাদেরকে কঠিন শাস্তির আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে যে সকল ম্যানেজমেন্টের আন্ডারে কোম্পানি সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের কমপ্লায়েন্স পরিপালন করতে ব্যর্থ হয়েছে সেই সকল কোম্পানির চেয়ারম্যান, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং কোম্পানি সচিবকে পরিবর্তন করে যোগ্য লোক নিয়োগ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
তাদের বাকি দাবিগুলোর মধ্যে- সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে থেকে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিতে হবে, যে সকল কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন মূল মার্কেটের কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের সমান তাদেরকে সরাসরি মূল মার্কেটে ট্রেড করার ব্যবস্থা করতে হবে, যে সকল কোম্পানি সিকিউরিটিরজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের সকল ধরনের কম্প্লাইন্স মেইনটেইন করেছে তাদেরকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মূল মার্কেটে ট্রেড করার ব্যবস্থা করতে হবে, যে সকল এসএমই মার্কেটের শেয়ার পরপর তিন বছর ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে তাদেরকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মূল মার্কেটে ট্রেড করার ব্যবস্থা করে দিতে হবে, এসএমই মার্কেটের শেয়ার লোনের আওতায় থাকলে ব্রোকারেজ হাউস এবং মার্চেন্ট ব্যাংক মূল মার্কেটের শেয়ারের মত এসএমই শেয়ারে ও লোন প্রোভাইড করতে হবে, ওটিসি মার্কেট থেকে কোন শেয়ার এসএমই মার্কেটে আসার পর তারা যদি সব ধরনের কম্প্লাইন্স মেইনটেইন করে তাহলে তাদেরকে মূল মার্কেটে ট্রেড করার সুযোগ করে দিতে হবে, এসএমই প্লাটফর্মের সকল শেয়ারকে মূল মার্কেটের মত প্রতি কোয়ার্টার শেষে অথবা প্রতি ৬ মাস অন্তর বাধ্যতামূলক আর্থিক প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে, এসএমই মার্কেটের যে সকল কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন কম আছে তারা যদি মনে করে পরিশোধিত মূলধন বাড়াবে ব্যবসার খাতিরে তাদেরকে শর্ত সাপেক্ষে সেই সুযোগ করে দিতে হবে এবং প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার বিক্রি করে পেইডআপ বানানো বা বাড়ানো হয়েছে এমন কোন শেয়ারকে এসএমই মার্কেটে লিস্টেড করা যাবে না।
উপরোক্ত দাবিগুলো বিবেচনা করে বৈষম্য দূরীকরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসইসির চেয়ারম্যানের নিকট অনুরোধ জানান বিনিয়োগকারীরা।
সকল সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে সাত জন বিনিয়োগকারী স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবর পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সাত জন বিনিয়োগকারী হলেন- মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ (বিও হিসাব- ১২০২২৫০০৬৮৯৬৯৫৯০), মো. তাসমিনুল হক বিও (হিসাব-১২০২২৫০০৬৭৭৭৯৪২০), মো. মাইন উদ্দিন (বিও হিসাব-১২০২২৫০০৬২৪৭০৮১০), মো. শরিফুল ইসলাম (বিও হিসাব- ১২০৩১১০০৭৩৭১৪৩৮৬), মো. রাজু হোসেন (বিও হিসাব-১২০৬৫১০০৬৯৬৫৬৭৮৭), মোসাদ্দেক হোসেন (বিও হিসাব-১২০৫৬৯০০৭৫৪৬১৫৫) এবং মো. শাহীন উর রশীদ (বিও হিসাব- ১২০৩১৮০০১১২৪৫৫৭৫)।