ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

যেকোন এলাকায় ব্যাংকের শাখা না থাকলেও এখন সারা দেশের মানুষ ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছে। ব্যাংকগুলো শাখার পরিবর্তে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মতো বিকল্প সেবার মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। এর ফলে ব্যাংকগুলোর পরিচালন ব্যয় কমছে। এতে গ্রামীণ মানুষ আরও বেশি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত হতে পারছেন। চলতি অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে আগের বছরের চেয়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। একইসঙ্গে আমানতের পরিমাণ ৪ লাখ ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা বেড়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৯২৩ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে ঋণ বিতরণ করা হয়েছিলো ৪ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা। এই দশ মাসে আমানত সংগ্রহ করা হয়েছে ৩০ লাখ ১ হাজার ২০৬ কোটি টাকা। এর আগের অর্থবছরের একইসময়ে যার পরিমাণ ছিলো ২৫ লাখ ৭ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকা। আগের বছরের তুলনায় আমানত সংগ্রহ বেড়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা।

দেশের ব্যাংক খাতে ২০১৪ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। বর্তমানে এই সেবার গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৪৮ হাজার ৩৩৭টি। দেশব্যাপী পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজারে এরকম এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৪১১টি। আর এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট বেড়ে হয় ২১ হাজার ১১৫টি। এজেন্ট ব্যাংকিং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও ব্যয়সাশ্রয়ী হওয়ায় জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এজেন্ট আউটলেটে একজন গ্রাহক সহজেই তার হাতের আঙুলের স্পর্শের মাধ্যমে হিসাব পরিচালনা করতে পারেন। তাই গ্রামীণ জনপদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যকরী একটি উদ্যোগ বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।

এদিকে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করে ব্রাজিল। আর বাংলাদেশে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে প্রথম এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে। নীতিমালা অনুযায়ী, এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে প্রত্যেক এজেন্টের একটি চলতি হিসাব থাকতে হয়। এ সেবার মাধ্যমে ছোট অঙ্কের অর্থ জমা ও উত্তোলন করা যায়।

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স স্থানীয় মুদ্রায় বিতরণ, ছোট অঙ্কের ঋণ প্রদান ও আদায় এবং এককালীন জমার কাজও করেন এজেন্টরা। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন উপযোগ সেবার বিল পরিশোধের পাশাপাশি সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর অর্থও উত্তোলন করা যায়। এ ছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব খোলা, ঋণ আবেদন, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের নথিপত্র সংগ্রহ করতে পারেন এসব এজেন্ট। তবে এখনো বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই এজেন্টদের।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...