উত্তর কোরিয়া সরকারে দীর্ঘ সময ধরে কাজ করা কর্মকর্তা কিম কি নাম মারা গেছেন। বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে খবরটি জানানো হয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় তিন প্রজন্ম ধরে শাসনক্ষমতায় থাকা নেতাদের সবার সঙ্গেই কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। নেতাদের রাজনৈতিক বৈধতা দৃঢ় করতে তাঁদের পক্ষে প্রচার চালানোর কাজ করে গেছেন তিনি।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ৯৪ বছর বয়সে কিম কি নাম মারা গেছেন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে কিম কি নামের মরদেহের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। দেশের প্রতি অপরিসীম আনুগত্য দেখানো এ প্রবীণ বিপ্লবীর মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে শোকাহত।
উত্তর কোরিয়ার হাতে গোনা যে কয়েকজন কর্মকর্তা দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেছেন, তাঁদেরই একজন কিম কি নাম। ২০০৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম দে-জুংয়ের মৃত্যুর পর তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কিম কি নাম। কিম দে-জুং হলেন সেই নেতা, যিনি তাঁর ‘সানশাইন নীতি’ দিয়ে পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে পুনর্মিলনের যুগের সূচনা করেছিলেন।
স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেনের মতে, কিম কি নাম উত্তর কোরিয়ার নীতিমালা ও কর্মীদের ওপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন। তিনি ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক ভিত্তির গুরুত্বপূর্ণ স্থপতি ছিলেন।
বর্তমান নেতা কিম জং উনের বাবা কিম জং ইলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন কিম কি নাম। ২০১১ সালে কিম ইল মারা যান।
উত্তর কোরিয়ায় কিম পরিবারের তিন প্রজন্মের শাসন টিকিয়ে রাখতে যেসব কর্মকর্তা অনুগত থেকে কাজ করে গেছেন, তাঁদেরই একজন কি নাম। তিনি উত্তর কোরিয়া সরকারের প্রচার বিভাগের (প্রপাগান্ডা মেশিন) সামনের সারির নেতা হয়ে ওঠেন। উত্তর কোরিয়ার শাসকদের গুণগান গাওয়াই এ প্রচার বিভাগের কাজ। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি তথ্য বলছে, ১৯৬৬ সালে কিম কি নাম উত্তর কোরিয়ার প্রপাগান্ডাবিষয়ক উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন। ১৯৮৫ সালে কিম ইল সাংয়ের শাসনের সময়ে তিনি প্রপাগান্ডাপ্রধান হন। ২০১৭ সালে তিনি অবসর নেন।