আন্তর্জাতিক বানিজ্য লেনদেন রুপিতে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তা প্রাণ আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হবিগঞ্জ এগ্রো লিমিটেডের সফলভাবে নিষ্পত্তি করেছে। ২৪ লক্ষ রুপির এই নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক বানিজ্যের সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
এ উপলক্ষ্যে রাজধানীতে ইবিএল প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বানিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি।
প্রধান অতিথি বক্তব্যে বানিজ্য মন্ত্রী বলেন, “ভারত বাংলাদেশের বিশ্বস্ত ও গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। অন্য কোনও দেশের সাথে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মার্কিন ডলারকে বাদ দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য সম্পন্ন করলো। আমি মনে করি দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ যাত্রার শুরু”।
ইবিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার বলেন, “চলতি বছরের ১১ জুলাই বানিজ্য লেনদেন নিষ্পত্তির প্রক্রিয়ায় ভারতীয় রুপি ব্যবহারের একটি তাৎপর্যপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বানিজ্যিক অংশীদারিত্বে এটি পরিবর্তনের সূচনার মাইলফলক। এর লক্ষ্য হলো দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমিয়ে আনা, লেনদেনের ব্যয় হ্রাস, এবং একটি সাবলীল ও কার্যকরী বানিজ্য প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা”।
বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রনয় ভার্মা আশা প্রকাশ করেন, “নতুন এই বানিজ্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডলার একাধীক কনভার্শন জনিত বাড়তি ব্যয় কমানো সম্ভব হবে এবং দ্বিপাক্ষিক বানিজ্যের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে”।
অনুষ্ঠানে প্রদত্ত বক্তব্যে ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ জানান, “বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রায় দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পন্য ভারতে রপ্তানী করে এবং ভারত থেকে চৌদ্দ বিলিয়ন ডলারের পন্য আমদানী করে। নতুন এই ব্যবস্থায় বানিজ্যে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে”। তিনি বানিজ্য লেনদেন নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশী টাকাকে বিবেচনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (এফইপিডি) জাকির হোসেন চৌধুরী জানান, “সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংককে রুপিতে বানিজ্য নিষ্পত্তির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই আরও অনেক ব্যাংককে এজাতীয় অনুমতি দেয়া হবে”।
ইবিএল অরিতিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন তার ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যে বলেন, “স্থানীয় ও আঞ্চলিক মুদ্রায় ইনভয়েসিং এবং সেটেলমেন্টের ক্ষেত্রে এটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ হলেও এর মাধ্যমে আমরা সুদূরপ্রসারী কিছু লক্ষ্য অর্জনের জন্য যাত্রা শুরু করেছি, যেমন বর্ধিত দ্বিপাক্ষিক বানিজ্য, প্রতিযোগিতামূলক হওয়া এবং বানিজ্য সহজীকরণের সম্ভাবনা কাজে লাগানো”।
ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, আইসিআইসিআই ও স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিবৃন্দ, এবং স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সিনিয়র কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।