এতো সব কিছুর পরও বিনিয়োগকারীদের জিম্মি করে ,নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বড় কর্তাদের চাপে ফেলে ফ্লোর তুলতে মরিয়া একটি চক্র। উন্নয়নের ধাবাহিকতায় সরকার বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করলেও পুঁজিবাজার বিমুখ ভূমিকা দুঃখজনক বলে আখ্যা করেন দেশটির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। বেড়ে যাচ্ছে তাদের মুদ্রাস্ফীত , পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মানের বিপরীতে কমছে ডলারের মান। অনেকটা বাড়ার পর মূল্য সংশোধনে পথে ডলার।
আমেরিকান বহুজাতিক বিনিয়োগ ব্যবস্থাপনা এবং আর্থিক পরিষেবা সংস্থা মরগান স্ট্যানলি সেনসেক্সের ইনডেক্স আগামী বছর ৮০০০০ পৌঁছে যাবে বলে আশাবাদ করেছেন। তারা আরো বলেন ইন্ডিয়ান বন্ড মার্কেট জে পি মরগ্যান এমেজিং মার্কেট বন্ড ইনডেক্সে প্রবেশের জন্য আগামী বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। EMBI তে প্রবেশের ফলে ইন্ডিয়াতে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন মরগ্যান স্ট্যানলি , যা ইন্ডিয়ার অর্থনীতিকে আরো এগিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে সেনসেক্স ৬২,৮৬৮ ইনডেক্সে অবস্থান করছে।
ইন্ডিয়ার পুঁজিবাজারে উৎসবের আমেজ বইছে , অন্যদিকে সীমান্ত ঘেঁষা দেশ বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সংকট কাটছেই না। দেশটির বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বর মাসে ৫০৯ কোটি ২৫ লক্ষ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত নভেম্বরের থেকে ২৬ শতাংশ বেশি। টাকার অংকের যার পরিমান ৫১ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতিতে সবাইকে অবাক করে দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে নতুন ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যে এক মাসে ৫ বিলিয়ন (৫০০ কোটি) ডলার আয়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
এতো সব সুখবরের মধ্যেও পুঁজিবাজারের এই করুন দশার দায় পুঁজিবাজার সংশিষ্টদের দিচ্ছেন দেশটির বিনিয়োগকারীরা। নানাসময় পুঁজিবাজার থেকে অর্থ আত্মসাৎ , দুর্বল মনিটনিং সিস্টেম এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোম্পানি মালিকদের কর্তৃক লুন্ঠনের প্রবণতাকে দায়ী করেন।
বিগত নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বড় কর্তাদের দিকে আঙ্গুল তুলে বিনিয়োগকারীরা বলেন দীর্ঘদিন ধরে পুঁজিবাজারকে অবহেলিত করে রাখায় আজ এই দুর্দশা দেখতে হচ্ছে। যখনি কারসাজি হয় তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিলে বড় ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পায় পুঁজিবাজার। কালক্ষেপন করে কারসাজি চক্রকে বিনিয়োগকারীদের অর্থ লুণ্ঠনে আরো উৎসাহী করা হয়। বিগত বছর গুলোতে দুর্বল কোম্পানি লিস্টিং পুঁজিবাজারের ভাবমূর্তি বিশ্ব দরবারে ক্ষুন্ন করেছে।
তবে শুধু মাত্র নিয়ন্ত্রণ সংস্থার উপর এককেন্দ্রিক দোষারোপে নারাজ অনেকেই। তাদের দাবি ব্রোকার হাউস গুলোর ট্রেডিং সিস্টেমের সাথে সরাসরি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের মনিটরিং টীম জড়িত। এই মনিটরিং টিমের অনেকেই কারসাজি চক্রের সাথে যোগসাজশে পুঁজিবাজারে অনিময়ম করে আসছে।
এতো অনিয়ম , ঘন ঘন বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণার খেসারত দিচ্ছে দেশটির পুঁজিবাজার। পুঁজিবাজার থেকে যেন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে প্রশ্ন উঠে আগামীতে ব্যাংক নির্ভরশীল অর্থনীতি সুফল বয়ে আনতে সক্ষম হবে কি ?
সংকট উত্তোলনে অর্থমন্ত্রণালয় , বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থার একত্রিত মিলিত প্রচেষ্টার দাবি করেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট ফুটে উঠে পুঁজিবাজারের প্রতি আস্থাহীনতার চিত্র। অলস টাকা নিয়ে বসে থাকলেও পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে উৎসাহী নন সাধারণ মানুষ।
লক্ষণীয় এতো সব কিছুর পরও বিনিয়োগকারীদের জিম্মি করে ,নিয়ন্ত্রণ সংস্থার বড় কর্তাদের চাপে ফেলে চাপে ফেলে ফ্লোর তুলতে মরিয়া একটি চক্র। উন্নয়নের ধাবাহিকতায় সরকার বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করলেও পুঁজিবাজার বিমুখ ভূমিকা দুঃখজনক বলে আখ্যা করেন দেশটির সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
সোনালি চক্রবর্তী
বাঁকুড়া , পশ্চিমবঙ্গ