প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম মারা গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে তিনি অত্যন্ত সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে তিনি রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তার মৃত্যুতে দেশের গণমাধ্যম হারালো একজন প্রিয় সহকর্মীকে আর আমি হারালাম একজন বিশ্বস্ত কর্মকর্তাকে।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার মৃত্যু হয় ইহসানুল করিমের।
ইহসানুল করিমকে ২০১৫ সালের ১৫ জুন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তার নিয়োগের মেয়াদ ২০১৬ সালের ১৬ জুন তিন বছরের জন্য বাড়ানো হয়।
২০১৯ সালের ১৮ জুন আরও তিনবছর তার নিয়োগের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালের জুনে আরও একদফায় তার নিয়োগের মেয়াদ দুবছরের জন্যে বাড়ানো হয়।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার আগে, তিনি রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ২০০৯-২০১৩ সালে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বাসসে তিনি ১৯৭২ সালে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
ইহসানুল করিম তার দীর্ঘ সাংবাদিকতা জীবনে বিবিসি (ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন) ও পিটিআই (প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া)-সহ কয়েকটি বিদেশী সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহবানে সাড়া দিয়ে তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন এবং বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্সের (বিএলএফ) সদস্য হিসেবে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেন।
ইহসানুল করিম কুষ্টিয়া জেলার এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজম ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি বাসসের নয়াদিল্লি সংবাদদাতা হিসেবে ভারতে পাঁচ বছর কাজ করেন।
ইহসানুল করিমের সহধর্মিণীর নাম মমতাজ শিরিন করিম। তাদের এক কন্যা ও এক পুত্রসন্তান রয়েছে।