মারধর, হুমকি ও যৌন হয়রানির মামলায় আদালতে হাজির হয়ে সাক্ষ্য দিলেন আলোচিত নায়িকা পরীমণি। সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এসময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
সোমবার (২৪ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০ টায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক শাহিনা হক সিদ্দিকার আদালতে আসেন পরীমনি। দুপুর ১২টা৫০ মিনিটে তার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়।
সাক্ষ্যে পরীমণি বলেন, “ঐদিন নাসির আমাকে অনেক গালাগালি করে। এরপর বলে তোকে গালাগালি করে কি হবে বলে আমার গায়ে হাত দেওয়া শুরু করে। আমি বাধা দিতে চেষ্টা করি কিন্তু তারা আমাকে চেয়ারে চেয়ার বেঁধে ফেলে। সে আমার গলা টিপে ধরে ও বাজে ভাবে আমাকে টাচ করে। ওয়েটার দূরে আছে কিন্তু তাকে গলা ধরে বের করে দেওয়া হয় এরপর নাসির উদ্দিন লাইট বন্ধ করে দিতে বলে এবং বলে সবাই বের হয়ে যাও। লাইট অফ করে দাও। এরপর সমস্ত লাইট অফ হয়ে যায় শুধু টিভির মনিটরের সামান্য আলো ছিল। সে আমাকে অনেক জোরাজুরি করে। জিমি ও আমার সাথে আসাম এটি চিৎকার চেঁচামেচি তে লাইট ফ্যান আবার চালু হয় ও লোকজন ফিরে আসে। কি ধরনের জোরাজুরি করতেছিল তার আইনজীবীর এমন প্রশ্নের জবাবে পরীমণি বলেন যে, তখন নাসির জোর করে আমার টি-শার্ট খোলার চেষ্টা করতেছিল।
এ সময় আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরীমনি। তার মুখে যখন কথা বের হচ্ছিল না তখন তাকে বারবার ওড়না দিয়ে চোখ মুছতে দেখা গেছে। তাকে জোরে জোরে শ্বাস নিতে দেখা গেছে।
এই নায়িকা বলেন, মাননীয় আদালত, সেদিনকার ঘটনা মনে পড়লে আমি আজও ট্রমাটাইজ হয়ে যাই। পরীমনি এ কথা বলে আবারো কাঁদতে থাকেন।
এ সময় আদালত বলেন যে, পরীমনি আরো কিছু বলতে চান কিন্তু লোকজন দেখে হয়তো বলতে পারছেন না। আদালত তাকে বলেন, আপনি যদি চান তবে আপনার বিচার ক্যামেরা ট্রায়াল হতে পারে অথবা সবাইকে বের করে দিয়ে এ আদালতেও হতে পারে।
আইনজীবীরা মৌখিকভাবে ক্যামেরা ট্রায়ালের আবেদন করলে আদালত বলেন যে আপনারা লিখিত দেন। পরবর্তী বিচার হবে ক্যামেরা ট্রায়ালে। পরবর্তী সাক্ষীর জন্য আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
২০২১ সালের ১৪ জুন সাভার থানায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন চিত্রনায়িকা পরীমনি।
মামলা দায়েরের পর অভিযানে নামে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। ওইদিনই নাসির উদ্দিনসহ পাঁচজনকে উত্তরার একটি বাসা থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসির, অমি এবং শহিদুল আলম নামে এক ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন।