ব্যাংকগুলো চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) কৃষি খাতে ৫ হাজার ৩০৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এ সময় আদায় হয়েছে ৫ হাজার ২৫০ কোটি টাকা, যা মোট ঋণ স্থিতির ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগস্ট মাস শেষে ব্যাংকগুলোর কৃষি ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ২৩০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণ হয়েছে ৫ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ১৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগের বছর এই সময়ে বিতরণ করা হয়েছিল ৩ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা। যা সেই সময়ের মোট লক্ষ্যমাত্রার ১২ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এদিকে সমাপ্ত অর্থবছরে ব্যাংক খাত ৩২ হাজার ৮৩০ কোটি টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছিলো। তবে এ সময় কৃষকেরা ৩৩ হাজার ১০ কোটি টাকার ঋণ শোধ করেছেন। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে আদায় হয়েছিল ২৭ হাজার ৪৬৩ কোটি টাকা। এ হিসাবে গত অর্থবছরে কৃষি ঋণ আদায় বেড়েছে ৫ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো সর্বশেষ ২০২২ সালে ৬৩ হাজার ৭১৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফশিল করেছে। ফলে এসব ঋণ খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়নি। এরপরও গত বছরের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। পুনঃতফশিল করা ঋণকে খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত করা হলে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ২০ শতাংশের কাছাকাছি হতো।
এদিকে গত বছরের শেষে পুনঃতফশিল করা ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা, যা ব্যাংক খাতের মোট ঋণের ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। ফলে খেলাপি ঋণের চেয়ে পুনঃতফশিল করা ঋণ এখন বেশি। এছাড়া ২০২২ সাল পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা ঋণ অবলোপন করা হয়েছে।
এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো শিল্প খাতে মেয়াদি ঋণ বিতরণ করেছিল ৭২ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা। বিপরীতে আদায় করতে পেরেছিল ৬৪ হাজার ৮৬২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের শিল্প ঋণ বিতরণ ও আদায়ের চূড়ান্ত হিসাব এখনো প্রকাশ করতে পারেনি বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের মোট খেলাপি ঋণের ৫৫ শতাংশই উৎপাদনশীল শিল্প খাতের। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে জাহাজ ভাঙা ও নির্মাণ খাত। এ খাতে বিতরণকৃত ঋণের ২২ দশমিক ৪৩ শতাংশই এখন খেলাপি। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতে খেলাপি ঋণের হার ১১.১২ শতাংশ, বস্ত্র খাতে ১১ দশমিক ৫৪ ও চামড়া শিল্পের ১১ দশমিক ৭৫ শতাংশ ঋণ খেলাপি। দেশের মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে কৃষি খাতের অংশ মাত্র ২ দশমিক ৯০ শতাংশ।